দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল মাঝরাতে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারি করে তা আবার প্রত্যাহারও করেছেন । সংসদ সদস্যদের তীব্র বিক্ষোভের মুখে সামরিক আইন জারির আদেশ প্রত্যাহারের কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে টিভিতে দেওয়া ভাষণে সামরিক আইন ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। এরপরপরই বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি।
পার্লামেন্টে ইউন সুক-ইওল বলেন, সামরিক আইনের অবসান ঘটাতে পার্লামেন্টের অবস্থান মেনে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার পরপরই সামরিক আইন প্রত্যাহার করা হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠক করে সামরিক আইন প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। অবিলম্বে সামরিক আইন জারির আদেশটি বাতিল হয়ে যাবে।
এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে টিভিতে দেওয়া ভাষণে সামরিক আইন ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। দেশটির প্রধান বিরোধী দলকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত করেন তিনি। সেই সঙ্গে ইওলের পিপল পাওয়ার পার্টি ও প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে আগামী বছরের বাজেট বিল নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে সামরিক শাসনের ঘোষণাটি আসে।
জাতির উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি থেকে উদার দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করার জন্য ও রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোকে নির্মূল করার জন্য আমি জরুরি সামরিক আইন ঘোষণা করছি।
তবে সুক-ইওলের এই আকস্মিক আদেশ মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা। তারা পার্লামেন্টে এই আদেশ জারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। এমনকি, প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের দাবিতে তাদের স্লোগান দিতেও শোনা যায়। একপর্যায়ে কিছু সময়ের জন্য পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা। ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার নামতেও দেখা যায়।
এমন পরিস্থিতিতে রাতেই পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়। ৩০০ আইনপ্রণেতার মধ্যে ১৯০ জন সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে ভোট দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধানে বলা আছে, ৩০০ সদস্যের অর্ধেকের বেশি আইনপ্রণেতা চাইলে সামরিক আইন তুলে নেওয়া যাবে।
২০২২ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে আছেন ইউন সুক-ইওল। পিপল পাওয়ার পার্টি তার রাজনৈতিক দল। দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থী লি জ-মায়ুংকে খুব কম ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন ইওল।