১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়কে রূপান্তরিত হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণার পর রায়ের এক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, এই (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রিনেমড হতে পারে। যেমন, জেলা ও দায়রা জজ একই ব্যক্তি। যখন সিভিল মামলা করেন তখন তাকে বলা হয় জেলা জজ। আবার ওই একই ব্যক্তি যখন ক্রিমিনাল মামলা পরিচালনা করেন তখন তিনি দায়রা জজ। তেমন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যক্তিরা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সিস্টেমে চলে যাবে, উনারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবেন। এতে সাংবিধানিক সাংঘর্ষিকতার কোনো জায়গা নেই।

রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরোটা রিটকারীপক্ষ অবৈধ ঘোষণা চেয়েছিল। হাইকোর্ট পুরোটা অবৈধ বলেননি। তবে পুরোটা অবৈধ বলার মতো উপাদানের কথা উনারা বলে গেছেন।

তিনি বলেন, অনুচ্ছেদ ৭ ক ও ৭ খ, এ দুটো অবৈধ। এটা এমনভাবে ধরে নিতে হবে যে এটা আইনে ছিল না। সংবিধানে এটা ছিল না, এভাবে হবে।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করাটা অবৈধ হয়েছে। এখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েছে। উনারা রেফারেন্স হিসেবে বলেছেন, গত তিনটি নির্বাচন কীভাবে হয়েছে এবং কীভাবে দেশের গণতন্ত্র নির্বাসিত হয়েছে। কীভাবে আইনের শাসন ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। কীভাবে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কীভাবে সংবিধানের মূল কাঠামোতে আঘাত করা হয়েছে।

‘গণভোটে জনগণের যে ক্ষমতা, সেটাকে সংকুচিত করা হয়েছিল। সেই সংকুচিত করাকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেন। অন্য বিষয়গুলোর বিষয়ে পার্লামেন্ট দেখবেন বলে ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এটাও বলেননি, ওটা বৈধ বা অবৈধ।’

তিনি বলেন, এরপর ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে। সেখানে আপিল বিভাগ যে ফাইন্ডিং এসেছে তা দেখবেন।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপিল বিভাগে (ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার) যে রিভিউ পেন্ডিং আছে তা বাইপাস করেই হাইকোর্টের এ রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেন আছে? কারণ, তত্ত্বাবধায়কের ত্রয়োদশ সংশোধনীতে দুটি পার্ট। এক হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বৈধ নাকি অবৈধ। এ পার্টে চারজন বলছেন অবৈধ, তিনজন বলেছেন বৈধ। আবার দ্বিতীয় পার্টে সব বিচারপতি বললেন, পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে। এই যে পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে এটা বলার আগেই পঞ্চদশ সংশোধনী চলে এসেছে। তাহলে ধরে নেওয়া হবে, ওই জাজমেন্ট কার্যকর আছে। কমপক্ষে আগামী দুটি নির্বাচন তো আপিল বিভাগের এটেনশন লাগে না। অর্থাৎ আপিল বিভাগে থাকা ত্রয়োদশ সংশোধনীর রিভিউ রায়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় না।

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল আংশিক যথাযথ ঘোষণা করে মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

ইজতেমা ময়দানে জুবায়ের ও সাদপন্থিদের সংঘর্ষে ২ জন নিহত

গাজীপুরে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের দুই মুসল্লি নিহত ও বেশ কিছু মুসল্লি আহত

ভিনিসিয়ুস ফিফার বর্ষসেরা ‘দ্য বেস্ট’

২০২৩-২৪ মৌসুমে ২৪ গোল এবং ১১ অ্যাসিস্টসহ রিয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় এবং লা লিগা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ভিনিসিয়ুস। ব্যালন ডি’অরের বড় দাবিদার ছিলেন। ভিনিসিয়ুস

যেসব বিধান পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ে বাতিল হলো

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তত ৫৪ বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এর বৈধতা

বিচার বিভাগ ধ্বংসের দায় সাবেক দুই প্রধান বিচারপতির: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান – তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাসহ বিচার বিভাগ ধ্বংসে সাবেক দুই প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে দায়ী

Scroll to Top