মহাবিপন্ন এশিয়ান কালো ভালুকের দেখা মিলেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহিন অরণ্যে । সম্প্রতি হারিস দেব বর্মা নামের স্থানীয় শৌখিন আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় ভালুকটির ছবি ধরা পড়ে। এজন্য উদ্যানের ভেতরে জনসাধারণের অবাধ চলাফেরায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বন বিভাগের ধারণা, ভালুকটি এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির। বাংলাদেশে মহাবিপন্ন অবস্থায় রয়েছে এটি। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। ছোট-বড় মিলিয়ে এরকম ১০-১২টি ভালুক রয়েছে ওই উদ্যানে। এছাড়া সম্প্রতি সাতছড়ি বনে গবেষণা করতে আসা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাচ্চাসহ ভালুক দেখার কথা জানান।
আলোকচিত্রী হারিস বলেন, সাতছড়ি মাত্র ২৪৩ হেক্টরের জাতীয় উদ্যান। চিরহরিৎ এ বনে অনেকদিন ধরেই আমরা ভালুকের সন্ধান করছি। এবার সরাসরি পেয়েছি। প্রথমে ভয় পেলেও ঝুঁকি নিয়ে ছবি তুলে আসি।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, এ প্রজাতির ভালুক সচরাচর দেখা যায় না। এটি সংরক্ষণে আমরা আরও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিষয়েও সতর্ক করছি। এখন পর্যন্ত ভালুক দ্বারা কেউ আক্রান্ত হননি। তেলমাছড়া বিটের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, এ উদ্যানে যথেষ্ট পরিমাণ মায়া হরিণ, বনবিড়াল, বন্য শূকরের চলাফেরা আমরা সচরাচর লক্ষ করি। ভালুক থাকার বিষয়টি আমাদেরকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনতাসির আকাশ বলেন, সিলেটের রাজকান্দি বনে আমরা ৫টি ভালুকের সন্ধান পেয়েছি। এছাড়া লাঠিটিলা ও সাগরনাল বনে ভালুক রয়েছে বলে জানি। চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, কেউ যাতে ভালুক শিকার বা পাচার করতে না পারে, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বনে ভালুকের খাবারের পর্যাপ্ত জোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যপ্রাণী শিকার নিষিদ্ধ করতে হবে।