১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার আপিল শুনানি ২৬ ফেব্রুয়ারি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আওয়ামী লীগ নেতা ও গাজীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দস কাজল।

এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল দ্রুত শুনানি করতে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দস কাজল আসামিদের পক্ষে এ আবেদন করেন।

এর আগে ২০১৬ সালের ১৫ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায়ে ১১ জনকে খালাস দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (সাবেক প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের (আপিল বিভাগ থেকে অবসর) বেঞ্চ। রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ অন্য ছয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালতে দণ্ড পাওয়া জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক থাকায় তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত। আসামিদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে ও ৯ জন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া দুজন মারা গেছেন।

বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া ওই ১১ আসামি হলেন, আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসির সাজা কমেছে এবং বাকি একজনের আগের সাজাই বহাল রয়েছে। এদিকে, মারা যাওয়া দুই আসামির করা আপিলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।

আর মামলার মোট ৩০ আসামির মধ্যে দু’জন বিচারিক আদালতেই খালাস পেয়েছিলেন।

চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ছয়জন হলেন, নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু (পলাতক), মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।

মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন হলেন, মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু (পলাতক), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (পলাতক), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর (পলাতক), আবু সালাম ওরফে সালাম ওমশিউর রহমান ওরফে মশু (পলাতক)। যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামি হলেন নুরুল আমিন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অহিদুল ইসলাম টিপু পলাতক থাকায় তার সাজার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।

বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়ার পর মারা যাওয়ায় আল আমিন ও রতন ওরফে ছোট রতনের আপিলের নিষ্পত্তি করে দেন হাইকোর্ট।

৩০ আসামির বাকি দু’জন কবির হোসেন ও আবু হায়দার ওরফে মিরপুরইয়া বাবু বিচারিক আদালত থেকেই খালাস পেয়েছিলেন।

২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এরপর বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও দু’জনকে খালাস দেন।

পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়। এর পর ২০১৬ সালের ১৫ হাইকোর্টের রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার রায়ে ৬ জনের ফাঁসি বহাল। এই মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে নিম্ন আদালতে মোট ২৮ জনের দণ্ড হয়। এর মধ্যে ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এসব আসামিদের মধ্যে ১৭ জন কারাগারে ও ৯ জন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া দুজন মারা গেছেন।

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

খোকসায় বিদ্যুৎ শর্ট সার্কিটে আগুন, তিনটি দোকানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

মোঃ নুর আলম পাপ্পু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ আজ ১৪ই মার্চ রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকায় খোকসা থানাধীন জানিপুর ইউনিয়নের একতারপুর বাজারে বিদ্যুৎ শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে

তজুমদ্দিনে পারিবারিক কলহে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা

খন্দকার নিরব, ভোলা প্রতিনিধিঃ পারিবারিক কলহের জেরে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় রোজা মুনিয়া (রনজা-৩০) নামে প্রবাসীর স্ত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত রোজা মুনিয়া (রনজা) উপজেলার শম্ভুপুর

ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য শাস্তির আইন পাশ করতে হবে: মির্জা ফখরুল ইসলাম

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, দৈনিক আমার বাংলাদেশ প্রতিনিধিঃ  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। নারী ও শিশু

শেরপুরে জেলা প্রসাশন এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের আয়োজনে গাছ সুরক্ষা বা পেরেক অপসারণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে

মোঃ নজরুল ইসলাম, শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ডিসি উদ্যানের বিভিন্ন গাছে পেরেক দিয়ে সাইনবোর্ড বিলবোর্ড সহ বিভিন্ন প্রচারণা বোর্ডের পেরেক অপসারণ উদ্বোধন করা

Scroll to Top