১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহ ও নবীর অবমাননায় শাস্তির দাবিতে ১৫০ আলেমের বিবৃতি

মাহমুদুর রহমান নাঈম, ঢাকা প্রতিনিধিঃ

সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির অন্যতম সদস্য রাখাল রাহা (সাজ্জাদুর রহমান) মহান আল্লাহ তায়ালার শানে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি পোস্ট প্রকাশ করেন (পরিস্থিতির চাপে পড়ে তিনি পরবর্তী সময়ে পোস্টটি মুছে ফেলেন)। এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত করেছেন, যা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এর প্রতিবাদে দেশের বিশিষ্ট ১৫০ জন আলেম বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, এই ধরনের বক্তব্য শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি, সামাজিক বিভাজন উসকে দেওয়া এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টের একটি ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়। বিশেষত, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে একই ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রাখাল রাহার আগে কথিত কবি সোহেল হাসান গালিবও রাসুলুল্লাহ সা. সম্পর্কে চরম কুরুচিপূর্ণ ও ঘৃণ্য মন্তব্য করেছেন, যা দেশের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং সুসংগঠিত পরিকল্পনার অংশ বলে প্রতীয়মান হয়, যেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক উত্তেজনা ও সংঘাত সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি, এই ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতাগুলো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোপূর্বে শিক্ষাক্ষেত্রেও রাখাল রাহা বিভিন্ন বিতর্কিত সংশোধন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং জাতীয় মূল্যবোধের প্রতি অবমাননাকর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা বইতে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি সংযোজনের মাধ্যমে তিনি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেন, যা দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছিল।
বাংলাদেশের আলেম সমাজ রাখাল রাহার সাম্প্রতিক ধৃষ্টতাপূর্ণ ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং সরকারের কাছে জোরালোভাবে দাবি করছে যে:
রাখাল রাহাকে (সাজ্জাদুর রহমান) অবিলম্বে এনসিটিবির পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি থেকে অপসারণ করতে হবে।তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া বক্তব্যের জন্য প্রচলিত আইনের আওতায় দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসাবে ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ম অবমাননা এবং উসকানিমূলক প্রচার প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করে বাংলাদেশেও উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা জরুরি।
আমরা বিশ্বাস করি, সরকার যদি এ ধরনের অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে এবং দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আমরা আশা করি সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায়, সৃষ্ট অসন্তোষ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে, যা জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন-
আল্লামা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, প্রফেসর ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মুফতী মুহা. কাজী ইব্রাহীম, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরি, ড. খলীলুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, ড. গিয়াসউদ্দীন তালুকদার, মাওলানা খুবাইব বিন তায়্যিব (জিরি), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ড. মানজুরে এলাহি, ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ড. মুহাম্মদ গোলাম রববানী, ড. মীর মনজুর মাহমুদ, প্রফেসর ড. সায়্যেদ মাকসুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, হাফেজ হাবিবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী, শায়খ হারুন আজিজী নদভী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক কুয়াকাটা, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন সাদী (সাইমুম সাদী) ড. ইউসুফ সুলতান, শায়েখ মুরতাজা হাসান ফয়জী মাসুম, ড. মো. রফিকুল ইসলাম আল মাদানী, ড. রশিদ আহমদ।

মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমাদ, মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল্লাহ আল-আমিন, মুফতি আমির হামজা, শায়খ কামরুল ইসলাম সাইদ আল আনসারী, শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক, মুফতি মনোয়ার হোসেন, শায়খ আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মুফতি আরিফ বিন হাবিব, সৈয়দ হাসান আল আযহারী, মাওলানা রাফী বিন মুনির, শায়খ জামাল উদ্দীন, মাওলানা আবদুল মজিদ, মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, শায়খ সাদিকুর রহমান আল-আযহারী, মুফতী মুহাম্মদ আলী, মুফতী আব্দুল্লাহ মাসুম, মাওলানা মীযান হারুন, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী, মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক কাসেমী, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, সৈয়দ শামছুল হুদা, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী, মাওলানা মিরাজ রহমান, ড. আবুল কালাম আজাদ মাদানী, ড. বি এম মফিজুর রহমান আল আজহারী, মুফতী শামছুদ্দোহা আশরাফী, মুফতি নোমান কাসেমী, শায়খ মোল্লা নাজিমুদ্দীন, মুফতি জিয়াউর রহমান, উস্তায আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান, মুফতি হেদায়েত উল্লাহ খান আজাদি, মাওলানা গাজি ইয়াকুব, মুফতী সাঈদ আহমাদ, মুফতি নুরুজ্জামান নাহিদ, মাওলানা আফীফ ফুরকান, মুহাদ্দিস মাওলানা আ.ন.ম. আকরাম হোসাইন, মাওলানা সিফাত হাসান, মহিউদ্দিন কাসেমী, মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসউদ, মুফতি আরিফ জাব্বার কাসেমী, মুফতি আবদুল গাফফার, মাওলানা নিজাম বিন মুহিব, মুহাম্মাদ নূরুল্লাহ, মাওলানা যুবায়ের আহমাদ, মাওলানা মুস্তাফিজ রহমানী,মুফতী আমজাদ হোসাইন আশরাফী, মাওলানা আমিন ইকবাল, মাওলানা ইমরান রাইহান, মাওলানা জহির উদ্দিন বাবর, মাওলানা নাজমুল হাসান, শায়খ ইউসুফ ওবায়দী, উস্তাদ আহমদ রফিক, মাওলানা হাছিব আর রহমান, শেখ ফজলুল করীম মারুফ, মাওলানা এম হাসিবুর রহমান, মাওলানা আসআদ বিন সিরাজ, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা ইয়াহইয়া তাকী, মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার, হাফেজ মাওলানা মুফতী আবু মুহাম্মদ রহমানী, মাওলানা আব্দুল কাহহার।

শায়খ ড. আব্দুস সালাম আজাদী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, মাওলানা বদরুজ্জামান, মাওলানা মুফতী আফিফ ফুরকান, মুফতী ড. খলীলুর রহমান, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি মুহাম্মাদ হেদায়েতুল্লাহ, মাওলানা মাকসুদ আল-আজমী, মাওলানা নাজমুল ইসলাম, মুফতি আম্মার বিন নূর, মাওলানা মির্জা আরাফাত, শাইখ সালাহউদ্দীন মাক্কী, মাওলানা উমায়ের বিন রশিদ, মাওলানা আবদুস সালাম যুক্তিবাদী, মাওলানা এমদাদ হোসেন, মাওলানা নুরুল কারীম আকরাম, মাওলানা গোলাম রব্বানী, মাওলানা মুস্তাফা, শায়খ জারির ইবনে আব্দুল্লাহ জাফরী, মুফতী নুরুন্নবী, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মুফতী তানভীর আহমদ, মুফতী আল আমিন, মুফতী সুলাইমান খান, মুফতী সালমান শেখ, হাফেজ মাওলানা হাসানুজ্জামান, মাওলানা নজির হোসাইন, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মুফতী আব্দুল্লাহ, মুফতী রফিকুল ইসলাম, মুফতী আবুল হাসান, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মুফতী ফাহিম আহমাদ, মাওলানা হাসান বনিক, মুফতী যোবায়ের হাসান, মাওলানা আল আমিন রংপুরী, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন, মুফতী মুহাম্মদ আলী যশোরী, মুফতী শরীফুল ইসলাম, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, হাফেজ জাহিদ হাসান, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা সাব্বির আহমদ, মাওলানা আবুল কাসেম আদিল, মুফতী দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দুর রহমান কোব্বাদি, মুফতি মোহাম্মাদউল্লাহ, মুফতি ইমামুদ্দিন, মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমি, মুফতি জুবায়েব আবদুল্লাহ কাসেমি, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবি

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

বরিশালের উজিরপুরে মাত্র ৭ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন আব্দুল্লাহ

উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুরে মারকাযুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল হিফজ মাদ্রাসায় মাত্র ৭ মাসে পবিত্র কুরআনের ৩০ পারা মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছেন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এ উপলক্ষে সংবর্ধনা

আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুর রহমান রহঃ – এক স্মরণীয় আলেম ও শিক্ষাবিদ

আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুর রহমান রহঃ ছিলেন ফটিকছড়ির শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ইসলামের একনিষ্ঠ খাদেম। তিনি শুধু একজন মুহতামিম ও শিক্ষকই ছিলেন না, বরং দ্বীনের সঠিক দিশা

অশ্রু যখন মুমিনের অস্ত্র—প্রভুর ভালোবাসায় সিক্ত হৃদয়ের নিবেদন

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান এক ফোঁটা অশ্রু, যা একান্তে প্রভুর সামনে গড়িয়ে পড়ে, তা পৃথিবীর সমস্ত অমূল্য রত্নের চেয়েও বেশি মূল্যবান। এই অশ্রু কেবল

বাকৃবিতে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে গণ-ইফতার ও ৫০০ কোরআন বিতরণ

আরাফাত হোসাইন, বাকৃবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ইসলামী ছাত্রশিবির রমজান উপলক্ষে ধারাবাহিক গণ-ইফতারের আয়োজন করেছে। সাত দিনে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার পরিবেশন করা

Scroll to Top