কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সুনীতি শান্তি হলের চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হলের কক্ষ ব্যবহার করে মাদক সেবনের অভিযোগ তোলেন একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়ে হলের পঞ্চাশ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর দেয়া হয়।
সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হলের পরিস্থিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থীকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত হলের বাইরে অবস্থান করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থী সুনীতি শান্তি হলের বাইরে অবস্থান করছেন। তবে চার শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিফা লিয়া আগামীকাল ডোপ টেস্টের ফলাফল প্রশাসনের কাছে জমা দিবেন বলে জানান প্রতিবেদককে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ থেকে চার শিক্ষার্থীকে হলের বাইরে থাকার সিদ্ধান্তের ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া যায়।
অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থী হলো- ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাবিনা ঐশী, লাবিবা ইসলাম, ফার্মাসি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আতিফা লিয়া ও আইন বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মাইশা রহমান রোদিতা।
অফিস আদেশে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয়ের সুনীতি শান্তি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রভোস্ট কমিটি ও প্রক্টরিয়াল বডির সমন্বয়ে আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩ টায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার সুপারিশক্রমে হলের পরিস্থিতি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে নিম্নোক্ত শিক্ষার্থীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আবাসিক হলের বাহিরে অবস্থানের জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদারকে মুঠোফোনে কল দিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্তদের একজন আতিফা নিয়ে বলেন, ‘উনারা (প্রশাসন) ৩ টা থেকে সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত মিটিং করে একদিনের জন্য হলের বাহিরে থাকার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। পরবর্তীতে মেয়ে মানুষ কোথায় যাবো ভেবে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে থাকার কথা বলেন। হলের মেয়েরা নাকি নিরাপত্তাহীনতা ফিল করবে এবং আমাদেরও ঝুঁকি আছে বলে আমাদের হল থেকে বের করেন। ওই হলে (নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী) আমার পরিচিত কেউ না থাকায় আমি আপাতত আমার ফ্রেন্ডের বাসায় আছি। এখন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে হল থেকে বের করছে। সামনে আমার পরীক্ষা। এখন কোথায় যাবো জানি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি ডোপ টেস্ট করিয়েছি। সেটা আগামীকাল প্রশাসনের কাব্যে দিব। এছাড়া আমাদের অভিভাবক ডাকিয়েছে।’
অভিযুক্তদের আরেকজন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকোত্তরের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাবিনা ঐশী বলেন, ‘তদন্ত যতদিন চলবে আমাদের নিরাপত্তা কথা চিন্তা করে বাহিরে থাকার কথা বলেছেন। আপাতত আমি বাহিরেই আছি।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইশা রহমান রোদিতা বলেন, ‘তদন্ত যতদিন চলবে ততদিন আমাদের নিরাপত্তার কথা বলে বাহিরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন বাহিরেই আছি।’
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলামকে এই ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চেয়ে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
সার্বিক বিষয়ে সুনীতি শান্তি হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোসাঃ শাহীনুর বেগমের মন্তব্য চেয়ে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, গতকাল (২৫ ফেব্রুয়ারি) সুনীতি শান্তি হলের প্রায় অর্ধশতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয় হল প্রশাসন ও প্রক্টর বরাবর।