আরাফাত হোসাইন, বাকৃবি প্রতিনিধিঃ
দেশব্যাপী ধর্ষণের বিরুদ্ধে ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা এক বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছে।
রোববার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড় থেকে শুরু হওয়া ওই মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রদক্ষিণ করে কেআর মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। মিছিল পরবর্তী সময়ে কে আর মার্কেটে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা— “আমি কে? তুমি কে? আছিয়া আছিয়া”; “উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট”; “একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর”; “আমার বোনের কান্না আর না, আর না”; “আমার বোন ধর্ষিত কেন? ইন্টারিম জবাব চাই”; “ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই”; “ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যু, মৃত্যু”; “ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলাদেশে হবে না”—সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বাকৃবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা ২৪ এ রক্ত দিয়েছি একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে আমাদের বোনেরা অনিরাপদ। আমরা নিরাপদ নগরী চাই যেখানে আমাদের বোনেরা নিরাপদভাবে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারবে। ধর্ষক কখনও মানুষ হতে পারেনা। যতদিন পর্যন্ত ধর্ষকের বিচার হবে না আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
বাকৃবির ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান বলেন, ২৪ এর জুলাই আগষ্টে আমরা রক্ত দিয়েছি ধর্ষকদের ঠাই বাংলাদেশে হবে এর জন্য নয়। আমাদের দেহে এক ফোঁটা রক্ত অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত কোনো ধর্ষক বাংলাদেশে অবস্থান করতে পারবেনা। ধর্ষকদের গ্রেফতারে অতি দ্রুত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানাচ্ছি। যতদিন ধর্ষকদের ফাঁসিতে না ঝুলানো হবে আমরা রাজপথ ছাড়ছি না
বাকৃবির সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জয় রায় বলেন, চব্বিশের জুলাই আগষ্টের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষনের ঘটনার খবর পাচ্ছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত একজন ধর্ষকের অন্তত যাবতজীবন কারাদণ্ড হয়েছে এমন কোনো খবর আমরা দেখতে পাইনি। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি ধর্ষকদের সাহস যোগাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের দাবি অতি দ্রুত ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।
এসময় বাকৃবির কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়াঙ্কা ঘোষ প্রীতি বলেন, “বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী অর্ধেক তার নর” শিক্ষিত জনগোষ্ঠী পাতার পর পাতা ভাব সম্প্রসারণ লিখতে পারলেও তারা হয়তো এ কথাটির মর্মার্থ কোনদিন বুঝে উঠতে পারেননি। নারীদেরকে যতদিন না পর্যন্ত “মাইয়া মানুষ” না মনে করে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন সংগ্রাম কোনোটাই সার্থক হবে না। নারীরা শুধু নারী নয় “মানুষ” হিসেবে তাদের নিজেদের দেশে নিরাপদ ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নেই এটা ভাবতেও আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত । আর তাই নিজের দেশে মুক্ত ভাবে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য এবং নির্ভয়ে জীবন যাপন করার অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতেই আজ আমরা রাস্তায়।”