দৈনিক আমার বাংলাদেশ প্রতিনিধিঃ
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে “পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার, গৃহীত পদক্ষেপ ও চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পতিত স্বৈরাচারী দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং এর সঙ্গতিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
যৌথ দলের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে পাচারকৃত সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের নামে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান ‘স্লাশ ফান্ডের’ অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এছাড়া, তাদের বিভিন্ন সদস্যের নামে ১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা, রাজউকের ৬০ কাঠা প্লট, ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমিসহ ৮টি ফ্ল্যাট জব্দ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে লুটপাট ও জালিয়াতির অভিযোগে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার তদন্ত শেষ হয়েছে এবং মামলায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ) হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এ পাঠিয়েছে এবং ১১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা থাকা ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা জব্দ করেছে।আজকের সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম সিদ্ধান্ত হলো, পাচার হওয়া এই টাকা কীভাবে ফেরত আনা যায়, সে বিষয়ে একটি বিশেষ আইন শিগগিরই প্রণয়ন করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই আইনটি প্রণয়ন করা হবে। এর মাধ্যমে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার কাজ ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যারা এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে, তাদের জন্যও একটি অনুপ্রেরণা ব্যবস্থা রাখা হবে।
পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে অনেকগুলো আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ২০০টি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে, এবং ৩০টির মতো আন্তর্জাতিক সুনামধন্য আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এগুলো বাংলাদেশের মানুষের টাকা, যত দ্রুত পারা যায়, এই টাকাটা বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনা হোক। পাচার করা টাকা কোথায় নিয়ে গেল, কীভাবে নিয়ে গেল, তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হোক। এর অগ্রগতি জানতে প্রতি মাসে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, ঈদের পরেই এর অগ্রগতি সম্পর্কে পরবর্তী বৈঠক হবে।