আসগর সালেহী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর ও পাইন্দং ইউনিয়নে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে তিনটি ইটভাটাকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে দিনব্যাপী এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩ (সংশোধিত-২০১৯) লঙ্ঘনের দায়ে হারুয়ালছড়ির মেসার্স বাংলা বাজার ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ২ লাখ টাকা, মেসার্স ন্যশনাল ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং (জিগজ্যাগ) ২ লাখ টাকা এবং মেসার্স ফটিকছড়ি ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং (জিগজ্যাগ) ৩ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয়।
অভিযানে প্রসিকিউটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন। এছাড়া ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহায়তা করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিযানে ভূজপুর থানার পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। ফটিকছড়িতে ৫২টি ইটভাটা প্রতিনিয়ত পরিবেশ ধ্বংস করছে।
ফটিকছড়িতে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা নিয়মিতভাবে পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে। কৃষিজমির উর্বর টপসয়েল কেটে নেওয়া হচ্ছে, আর ইট পোড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে অপরিপক্ক বাগানের গাছ। ফলে একদিকে কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়ছে, অন্যদিকে বৃক্ষনিধনের ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনে এসব অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসন মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে শুধু জরিমানার মাধ্যমে দায় সারে। এতে সাময়িকভাবে কার্যক্রম বন্ধ হলেও কিছু সময় পরেই ইটভাটাগুলো আবার পুরোনো রূপে ফিরে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অভিযানের মাত্র আধা ঘণ্টা পরই ইটভাটাগুলোতে আবারও আগুন জ্বলতে শুরু করেছে, ধোঁয়া উড়ছে আগের মতোই। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু জরিমানা করলেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং এটি লোকদেখানো ব্যবস্থা মাত্র। তারা প্রশাসনের কাছে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে এসব অবৈধ ইটভাটা পুরোপুরি বন্ধ হয় এবং পরিবেশের স্থায়ী ক্ষতি রোধ করা যায়।