১৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ময়লা সরাতে জবি প্রশাসনের অবহেলা

ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জমে থাকা ময়লা সরাতে অবহেলা করছে প্রশাসন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের মুক্ত মঞ্চের পেছনে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা জমে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অভাবে পরিস্থিতি দিন দিন আরও নাজুক হয়ে উঠছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চের পেছনে এবং তৃতীয় গেটের ডান পাশে ফাঁকা জায়গায় ক্যাম্পাসের সব ময়লা-আবর্জনা জমিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন না থাকার কারণে ময়লা জমে বিশাল স্তূপে পরিণত হয়েছে, যেখান থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

আরো জানা গেছে, পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটের পাশে নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা রাখা হতো এবং সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন নিয়মিতভাবে ময়লা সরিয়ে নিতো। তবে জুলাইয়ের অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আগের ঠিকাদাররা দায়িত্ব ছেড়ে চলে যায়। তখন থেকেই দ্বিতীয় গেটের পাশের ডাম্পিং স্টেশন তুলে দিয়ে মুক্ত মঞ্চের পেছনে ময়লা ফেলা শুরু হয়। সেখানে কোনো স্থায়ী ডাম্পিং ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। বর্তমানে মুক্ত মঞ্চের পেছনের ময়লা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করা হচ্ছে না।

এদিকে জবি পুরো ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য মাত্র ৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে, যার মধ্যে ৩ জনের বয়স ৫০-এর উপরে। ফলে ক্যাম্পাসে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় কার্যকর কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ না করায় জায়গাটা দিন দিন আরও দুর্গন্ধময় হচ্ছে।

ময়লা নিষ্কাশনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, “আগের ঠিকাদাররা চলে যাওয়ার পর নতুন ঠিকাদারদের সাথে দীর্ঘদিন কোনো যোগাযোগ হয়নি। আমরা তাদেরকে একাধিকবার ফোন করে ডেকেছি। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি।”

জবির ইংরেজী বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ময়লার দুর্গন্ধের কারণে আশপাশ দিয়ে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। এজন্য প্রশাসন ৩ নম্বর গেটও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমাদের অনেক ঘুরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয়।”

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাস এমনিতেও ছোট, বসার তেমন জায়গা নেই। একমাত্র মুক্ত মঞ্চটায়ও দুর্গন্ধের কারণে বসা যায় না। প্রশাসন রোজার আগে জায়গাটা দেখে গেলেও এখনো কোনো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেয়নি। সব কিছু আন্দোলনের মাধ্যমেই করতে হয়, তাহলে এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় বলার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় বলাই শ্রেয়।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অঞ্চলের থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ঠিকাদার মো. রাসেল বলেন, “ঈদের আগে যে ছেলেটি কাজ করতো সে রমজান মাসের শেষের দিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যান। আমরা নতুন লোক নিয়োগ দিয়েছি, সে গিয়ে ময়লা নিয়ে আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ময়লার ডাম্প দিতে পারি না, আগে পারতাম। কারো যদি ময়লা বেশি হয় তাহলে তারা নিজেদের উদ্যোগে ডাম্প কিনে নিবে। গত ২ মাস আগে হওয়া এক মিটিংয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন এই ব্যাপারে বলেন, “আগে যারা দায়িত্বে ছিল, তারা গত বছর ৫ আগস্টের পর চলে গিয়েছে। এখন সিটি কর্পোরেশনের সাথে আমাদের কোনো চুক্তি নেই। আগে তাদের নিজস্ব ভ্যান ছিল, এখন সেটাও নেই। তাই পরিষ্কারের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।”

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

পানিতে ডুবে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু, চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ

মোঃ ফাহিম, পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী হুসাইন মোহাম্মদ আশিক পানিতে ডুবে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনায়

নজরুল ক্যাম্পাসে আনন্দ শোভাযাত্রায় আনন্দের হিড়িক

মোছাঃ মাহমুদা আক্তার নাঈমা, জাককানইবি প্রতিনিধি: নতুন বছর,নতুন মাস,বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মাধ্যমে নতুনত্বের আহ্বানে ক্যাম্পাস জুড়ে দেখা মিলেছে নতুন-পুরাতন সকল মুখের।এমতাবস্থায় যেন আনন্দের ভিড় লেগেছে

জবিতে বৈশাখী মেলার বর্ণাঢ্য আয়োজন

ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি বর্ষবরণের উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং

ইবিতে আগামী ১৬ এপ্রিল নববর্ষ বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ওবাইদুল্লাহ আল মাহবুব, ইবি প্রতিনিধি: বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল) উৎসবমুখর পরিবেশে নানা আয়োজনের মধ্য

Scroll to Top