নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী শারমীন আক্তার তামান্নাকে একটি হত্যা মামলায় চার সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলে বিচারপতি মো. মাহবুব উল আলম এবং বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেন।
এই মামলায় তামান্নার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তাসনিয়া প্রধান। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
সম্প্রতি সাজ্জাদ হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার স্ত্রী তামান্না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তায় আদালত ও প্রশাসন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ভিডিওতে তিনি বলেন, “আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।” ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে।
সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে ঘটে একটি আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা। ২৯ মার্চ রাত সোয়া ২টার দিকে এক্সেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি চালায়। এতে মোহাম্মদ মানিক ও আবদুল্লাহ নিহত হন এবং আরও দুইজন আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ছোট সাজ্জাদ ও আরেক সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন বাবলার দ্বন্দ্ব থেকেই এই খুনের ঘটনা ঘটে। ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় নিহত মানিকের মা ফিরোজা বেগম মামলা দায়ের করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিহত মানিক সারোয়ারের গাড়ির চালক এবং নিহত আবদুল্লাহ তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
২৯ মার্চ রাতে প্রাইভেটকারে করে নতুন ব্রিজ এলাকায় আড্ডা দিয়ে ফেরার পথে রাজাখালী ব্রিজের ওপর দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল থেকে গুলি চালায়। এতে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে যায় এবং মানিক গাড়ি ঘুরিয়ে চকবাজারের দিকে যেতে থাকেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে গাড়ি থামালে হামলাকারীরা গাড়ির পেছনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়, এতে মানিক ও আবদুল্লাহ গুরুতর আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় আরও বলা হয়, আসামি সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ হামলা চালানো হয়েছে। বর্তমানে সাজ্জাদ চান্দগাঁও থানার ইট ও বালু ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন হত্যা মামলায় রিমান্ডে আছেন। তাকে গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মল থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।