নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অব্যাহত বর্বরোচিত হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোর থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত এই হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। খবর আল–জাজিরার।
ইসরাইলের বাধার কারণে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস। তিনি বলেন, “ত্রাণ প্রবেশে বাধার ফলে গাজায় রোগব্যাধি ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েছে। বর্তমানে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য বিদেশে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।”
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার ৮৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন। তবে সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানিয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়া বহু মানুষকেও মৃত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, টানা ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর গত ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল ইসরাইল। যুদ্ধবিরতির পর প্রায় দুই মাস শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করলেও গত মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে এই হামলা শুরু হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫২২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় তিন হাজার ৮০০ জন। এই হামলার মাধ্যমে কার্যত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরাইল।
জাতিসংঘের হিসাবে, এই দীর্ঘমেয়াদি আক্রমণের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অবরুদ্ধ উপত্যকার প্রায় ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় ইসরাইলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০–র বেশি মানুষকে গাজায় বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরই জেরে ইসরাইল গাজায় ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে, যা এখনও পর্যন্ত থামেনি।