মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
পূর্ব শত্রুতার জেরে নীলফামারী সদর উপজেলার অবিনাশের মোড় বটতলী বাজার নামক এলাকার এক হার্ডওয়ার ব্যবসায়ীর ওপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দোকানের ক্যাশবাক্সে থাকা ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে অবিনাশের মোড় বটতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬ জনের নামসহ ৩০-৩২ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে নীলফামারী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী।
আহত মো. আকসাদ আলী(৪০) নীলফামারী সদর উপজেলার অবিনাশের মোড় (বটতলী বাজার) এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী।
আসামিরা হলেন, ১. মো. সুকারু (২০) পিতা- মৃত. আজিজার রহমান, ২. খোকন ইসলাম(২৪),৩. রোকন ইসলাম(২৩) উভয় পিতা- মৃত. আজিজুল ইসলাম, ৪. বাবু ইসলাম(৪০), ৫. আবু হোসেন(৩৬) পিতা- মৃত. হালি, ৬. রুমন ইসলাম(২৫) পিতা- রবিউল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে অবিনাশের মোড় বটতলী বাজারে ওই ব্যবসায়ীর উপর সশস্ত্র ব্যক্তিরা তার হার্ডওয়ার দোকানে হামলা করে। তারা অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ব্যবসায়ীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
ভুক্তভোগী আকসাদ আলী জানান, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ফারুক হোসেনের সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়ে পরে সুকারু। আমি তাদের মিমাংসা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। পরে সুকারু তার দলবলসহ ৩০-৩২ জন দুর্বৃত্ত আমার দোকানে হামলা করে। এসময় দেশিয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আমার দোকানের ক্যাশবাক্সে থাকা নগদ ৩ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমি জীবন বাঁচাতে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে। তারা আমাকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে দাবি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আকুতি জানান আকসাদ আলী।
আরেক আহত ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা হার্ডওয়ার ব্যবসায়ীর উপর অতর্কিত হামলা চালানোর সময় এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা চালায় এবং আমার পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। আমি এর বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন ইসলাম জানান, হটাৎ চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা আমাকে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে। এসময় হোটেলের একটি কফি মেশিনসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
তিনি বলেন, সুকারুর নেতৃত্বে ৩০-৩২ জন সহযোগিরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও মালামাল লুট করেন।ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট কারোই কাম্য নয়। এ ঘটনায় দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ব্যবসায়ীদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও উদ্বিগ্নতা দেখা দিয়েছে।সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি ভুক্তভোগী এবং স্থানীয়রা জোর দাবি জানান।
এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ভারপ্রাপ্ত) এম আর সাইদ জানান, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।