নিজস্ব প্রতিবেদক:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে মার্কিন বাজার থেকে আমদানি বাড়িয়ে ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে জ্বালানি খাতের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকের কথাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ।
তিনি জানান, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর বৈঠকে অংশ নিতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন তিনি। এ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইউএসটিআর), বিনিয়োগকারী ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি ও মেশিনারিজ আমদানি করলে বাণিজ্য ঘাটতি কমবে। তবে আমরা চাচ্ছি স্বাভাবিক নিয়মে বাণিজ্য হোক, বিশেষ করে মার্কিন বাজারে আমাদের রফতানি পণ্যের জন্য জিএসপি সুবিধা আবার চালু হোক।”
তিনি আরও বলেন, “যদিও জিএসপির বিষয়টি শ্রম আইন ও ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তারপরও আমাদের তৈরি পোশাকের গুণগত মান রয়েছে। আগামী তিন-চার মাসে রফতানি বহুমুখীকরণে জোর দেওয়া হবে।”
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বৈঠকে বাজেট সহায়তা চাওয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ ও ওপেক ফান্ডের বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে বিশ্বব্যাংক ও ওপেক ফান্ডের সঙ্গে দুটি করে চুক্তি হতে পারে বলেও তিনি জানান।
কক্সবাজারে কার্যক্রম চালানো ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশনের সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থ পরিশোধ বিষয়ে ইউএস ট্রেজারির সঙ্গে আলোচনা হবে, যেখানে বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বৈঠকের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী কাউন্সিলের (এফবিসিসিআই-এর সমতুল্য সংগঠন) সঙ্গেও বৈঠক হবে। উপদেষ্টা জানান, সেখানে বিশ্বের শীর্ষ ৭০টি কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে আলোচনা হবে। পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ সংস্থা আটলান্টিক কাউন্সিলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত:
বৈঠকে টিসিবির জন্য ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার মূল্য ধরা হয়েছে ১৬৫ টাকা ৮৫ পয়সা এবং রাইস ব্রান তেল ১৬১ টাকা। এতে সয়াবিন তেলের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকা এবং রাইস ব্রান তেলের জন্য ১৭৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া দুটি কার্গো এলএনজি কেনা হবে, যার জন্য ব্যয় হবে ১১৩৭ কোটি টাকা।