নিজস্ব প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীতে আপন ভাই-বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের মাকে গ্রেফতার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। মামলাটি দায়ের করা হয় ১৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে, টঙ্গী পূর্ব থানায় (মামলা নং-৩৪), ধারা ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধি অনুযায়ী।
মামলার বাদী হচ্ছেন নিহত শিশুদের বাবা বাতেন মিয়া (৪৬), যিনি বর্তমানে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন পূর্ব আরিচপুর জামাই বাজার রুপবানের মার্কেট এলাকার জনৈক সারোয়ার হোসেনের মালিকানাধীন ৮তলা ভবনের ২তলার ৩/এ ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। তার স্থায়ী ঠিকানা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার তাতুয়াকান্দি গ্রামে।
পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, বাদী তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩০), বড় মেয়ে বর্ষা আক্তার ফাতেমা (৯), ছোট মেয়ে মালিহা আক্তার (৬) এবং একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (৩) কে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করছিলেন।
১৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ২টা ৪০ মিনিটে বাদী ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হয়ে সাহারা মার্কেট এলাকায় যান। এ সময় তার বড় মেয়ে ফাতেমা পাশের বাসায় বড় চাচার কাছে যায়। তখন ফ্ল্যাটে ছিলেন স্ত্রী আলেয়া বেগম, ছোট মেয়ে মালিহা এবং ছেলে আব্দুল্লাহ।
বাদী বাসা ত্যাগের পর দুপুর ২টা ৪০ থেকে বিকেল ৪টা ৪৫-এর মধ্যে কোনো এক সময়ে অজ্ঞাতনামা আসামি বা আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশু মালিহা ও আব্দুল্লাহকে গলা কেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে এবং তদন্ত শুরু করে। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা, পারিবারিক সাক্ষ্য ও স্থানীয়দের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহতদের মা আলেয়া বেগমকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আলেয়া বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। তবে হত্যাকাণ্ডের পেছনের সঠিক কারণ ও মোটিভ জানতে আরও গভীর তদন্ত চলছে। এছাড়াও অন্যান্য উৎস থেকেও তথ্য যাচাই-বাছাই অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (অপরাধ দক্ষিণ বিভাগ) উপ-কমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত তথ্য জানান।