সৈয়দ মাকসুমুল হক চৌধুরী সিয়াম, মোহনগঞ্জ প্রতিনিধি:
নেত্রকোণা হাওড় অধ্যুষিত মোহনগঞ্জ উপজেলায় পুরোদমে চলছে বোরো ধান কর্তনের কার্যক্রম।এ অঞ্চলের কৃষকেরা এখন বছরের একমাত্র প্রধান ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সার, সেচ, বিদ্যুৎ, বীজসহ কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় কৃষকেরা বেশ খুশি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মোহনগঞ্জে প্রায় ৬৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে হাওরাঞ্চলের জমির পরিমাণ ১৩ হাজার ৭৫ হেক্টর। বর্তমানে হাওরের ৫০ শতাংশ জমির ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। প্রতি একরে উৎপাদন ৪০ কেজি বা এক মন পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
হাওরাঞ্চলের কৃষকরা জানান, এবার শিলাবৃষ্টি বা ভারী বৃষ্টিপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ফসলের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষক রোনেল মিয়া বলেন, “এবার কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি, বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান স্থানীয়ভাবে ১২০০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে।”
স্হানীয় কৃষক শরীফ মিয়া জানান, “প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে, আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকেরা ভালোভাবেই ফসল ঘরে তুলতে পারবে।”
জেলার হাওর রক্ষা বাঁধ সঠিকভাবে নির্মাণ ও তদারকি হওয়ায় আগাম বন্যার ঝুঁকি কম রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, জেলার ৩৮০ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধের মধ্যে ১৪৬.১২ কিমি বাঁধ মেরামতে ৩১.৭৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
এছাড়া, বর্তমানে হাওরের ধান কাটায় ৪৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ব্যবহৃত হচ্ছে, ফলে দ্রুত ধান কর্তন সম্ভব হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের শতকরা ৮০ ভাগ পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে হঠাৎ বন্যার ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায়।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, “কৃষকদের সার্বিক সহায়তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবার ভালো উৎপাদনের আশা করছি।