নিজস্ব প্রতিবেদক:
অ্যান্টালিয়া ডিপ্লোমেসি ফোরামের পার্শ্ববৈঠকে প্রথমবারের মতো বৈঠকে মিলিত হয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার তেল ও গ্যাস খাত পুনর্গঠনে আজারবাইজানের সম্ভাব্য সহায়তা নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন কূটনৈতিক সূত্ররা।
সূত্র জানায়, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তেল-গ্যাস ক্ষেত্রগুলো বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (SDF)-এর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, সিরিয়া সেখানে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সোকার (SOCAR)-কে সম্পৃক্ত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে।
চলতি মাসেই সোকার তুর্কি শাখার প্রধান এলচিন ইবাদোভ জানিয়েছেন, কৌশলগত স্বার্থ থাকলে তারা সিরিয়ায় কাজ করতে প্রস্তুত। এরইমধ্যে এসডিএফ ও সিরীয় সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার ফলে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ সিরীয় সরকারের হাতে ফেরত যাওয়ার কথা রয়েছে।
নতুন সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তেল-গ্যাস আয়ের ৭০% যাবে কেন্দ্রীয় সরকারে, আর ৩০% ব্যবহার হবে স্থানীয় চাহিদা পূরণে।
এদিকে, একজন তুর্কি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিরিয়া-আজারবাইজান ঘনিষ্ঠতা ইসরায়েলের শঙ্কা কমাতে পারে। বিশেষ করে যখন ইসরায়েল সিরিয়ার ঘাঁটিতে হামলা চালাচ্ছে এবং তুরস্ক ও ইসরায়েল আজারবাইজানে ডিকনফ্লিকশন বৈঠক করছে।
বর্তমানে সিরিয়ায়:
- দৈনিক তেল উৎপাদন: ১.১০ লাখ ব্যারেল (২০১০ সালে ছিল ৩.৮৫ লাখ ব্যারেল)
- গ্যাস উৎপাদন: ৯.১ মিলিয়ন ঘনমিটার (২০১০ সালে ছিল ৩০ মিলিয়ন ঘনমিটার)
- উৎপাদনের বড় অংশ এসডিএফ-নিয়ন্ত্রিত
যুদ্ধকালীন নিষেধাজ্ঞায় ১১টি বড় তেল কোম্পানি সিরিয়া ছেড়ে গিয়েছিল। তবে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ‘জেনারেল লাইসেন্স ২৪’ জারি করে ছয় মাসের জন্য লেনদেন অনুমোদন দিয়েছে, যা ৮ জুন শেষ হবে।
অন্যদিকে ওয়াশিংটনের শর্ত আরও কঠোর হচ্ছে— যেমন, সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান ও ফিলিস্তিনি দলগুলোকে বহিষ্কার।
এই পরিস্থিতিতে, আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রেখে আজারবাইজানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে জ্বালানি খাতকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে চায় নতুন সিরীয় সরকার।