নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে মিয়ানমার। দেশটির জান্তা সরকার সম্প্রতি দাবি করেছে, ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত। তবে এই ঘোষণাকে ‘নতুন নাটক’ আখ্যা দিয়েছেন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী নেই সান লুইন।
তিনি বলেন, “মিয়ানমারের জান্তা সরকার কখনও সত্যিকার অর্থে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চায়নি। অতীতের মতো এবারও তারা আন্তর্জাতিক চাপ সামলাতে কৌশলী অবস্থান নিয়েছে।”
২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ছয় দফায় প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা হস্তান্তর করে। কিন্তু এখনও একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।
নিয়ন্ত্রণে নেই রাখাইন, বাস্তবতাই বড় বাধা
নেই সান লুইন জানান, রাখাইন রাজ্য এখন আর মিয়ানমার সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। সেখানে আরাকান আর্মি বা এএ’র নিয়ন্ত্রণ জোরদার। এ অবস্থায় জান্তার এই ঘোষণার বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নেই।
“এটি মূলত বাংলাদেশের প্রতি এক ধরনের বার্তা: যদি রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাও, তাহলে আরাকান আর্মির সঙ্গে কথা বলো,” বলেন নেই সান লুইন।
বাংলাদেশের করণীয় কী?
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারের উচিত বাস্তবতা বিবেচনায় এনে এখনই আরাকান আর্মির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা। যদিও বাংলাদেশ সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানায়নি, তবে নানা সূত্র বলছে, এএ’র সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।
নেই সান লুইন বলেন, “রাখাইন এখনো মিয়ানমারের অংশ হলেও জান্তা সরকারের সেখানে কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই এখনই সময় রোহিঙ্গাদের নিজ গ্রামে ফেরানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর।”
আরাকান আর্মির অবস্থান
এদিকে, আরাকান আর্মি স্পষ্ট করে বলেছে—রাখাইনে জান্তার কোনো কর্তৃত্ব নেই এবং তাদের যাচাই করা তালিকা গ্রহণযোগ্য নয়। তারা জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের উচিত সরাসরি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক চাপ এড়াতে মিয়ানমার ফের ‘নাটকীয়তার’ আশ্রয় নিচ্ছে। বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ না থাকলে, রোহিঙ্গা সমস্যা আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেই আশঙ্কা।