মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে বেড়েছে ভুট্টার আবাদ। পুরো বালিয়াকান্দি উপজেলায় এবার কয়েক জাতের ভুট্টা লাগিয়েছে চাষিরা। যেমন- পাঠান, মহাজাদু, রকেট,জমিদার, শাহিন শাহ,সহ অনেক জাতের ভুট্টার আবাদ করেছে কৃষক।
আবহাওয়া অনুকূল ঘাটতি থাকায়, ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে কিছু কৃষকের ।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় গত বছর ১৮ হাজার ১৩৪ হেক্টর জমিতে ভুট্টা হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এবার অতিরিক্ত ১১ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এই বছর আগের কয়েক বছরগুলোর তুলনায় বেশি ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ ফেরদৌস মন্ডল, বিল্লাল হোসেন, আবুল কাশেম মন্ডল, ইছাহক আলী জানান, বিগত কয়েক বছরে ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় এ বছর অনেক অঞ্চলের চাষিরা দিন দিন ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আমরা কেউ কেউ গত বছর পরীক্ষামুলক ভুট্টা চাষ করি। ১ পাখি, দেড় পাখি করে। তবে এই চাষ লাভবান হওয়ায় এবছরে ৫ পাখি ৭ পাখি ভুট্টা চাষ করেছি। আলহামদুলিল্লা অনেক ভালো ফলন পেয়েছি। এতে আমরা অনেক খুশি। এ ছাড়া মাঠে যেসকল জায়গা পরিত্যাক্ত পড়ে ছিলো সেসব জায়গাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক হারে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
উপজেলার নবাবপুর, জঙ্গল, জামালপুর, বহরপুর ইউনিয়নের ভুট্টা চাষিরা বলেন, আগে এই এলাকায় গম, কাউন,চীনা, ধান, মিষ্টি কুমড়া, হলুদ, মরিচ ও পাট চাষ বেশি হতো, কিন্তু এবার ভট্টা চাষ বেশি হওয়ার কারনে দামও কম।
বহরপুরের কৃষক মোঃ লালন সর্দার জানায়, ১ বিঘায় ভুট্টা তোলা পর্যন্ত ২৬ থেকে ২৮ হাজার টাকা খরচ হয়, এবং ভুট্টা বিক্রি হলে ৩৩ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আসে প্রতি বিঘায়।
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রফিকুল ইসলাম জানায়, গত মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৩৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষমাত্রা পূরণ করে এবছরে বালিয়াকান্দি উপজেলায ৩৫০ হেক্টর জমিতেই ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে। কৃষকদের লাভ ও আগ্রহের কারণে এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানায়, এবছরে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ৮০ জন কৃষককে ভুট্টার প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ভুট্টা চাষ করার জন্য ১ কেজি করে উন্নত জাতের ভুট্টার বীজ, ২০ কেজি করে ডিএপি মোট ১ হাজার ৬ শত কেজি ও এমওপি ১০ কেজি করে মোট ৮ শত কেজি প্রদান করা হয়েছে। ভুট্টা করার শুরু থেকে চার থেকে পাঁচবার পানি দিতে হয় এবং তিন থেকে চারবার সার দিতে হয়। কৃষক অনেক যত্ন সহকারে ভুট্টার আবাদ করায় এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকের মুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।