নিজস্ব প্রতিবেদক:
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকবাহী বাসে বন্দুক হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারতে আবেগ ও ক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছে। হামলায় আরও অনেক মানুষ আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের দিকে অভিযোগ তুলে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে ভারতের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।
এ পরিস্থিতিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাৎজু যুদ্ধের বিপক্ষে সতর্ক করে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান ব্যয়বহুল যুদ্ধের সামর্থ্য রাখে না, তাই উত্তেজনা না বাড়িয়ে কূটনৈতিক সমাধানের পথে এগোনো উচিত।
জিও নিউজে প্রকাশিত এক নিবন্ধে কাৎজু লেখেন, “ভারতের রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মহল হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। অনেকেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার ডাক দিয়েছেন। তবে যুদ্ধ অত্যন্ত ব্যয়বহুল, এর ফলাফল অনিশ্চিত এবং উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় যুদ্ধের কথা বলা নিরেট অবিবেচকের কাজ।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে উল্লেখ করেন, নেপোলিয়ন ও হিটলারের মতো শক্তিশালী শাসকরা দ্রুত বিজয়ের আশায় রাশিয়া আক্রমণ করলেও শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাৎজু বলেন, “২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর তৎকালীন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতীয় জনগণের কষ্ট বোঝার কথা বলেছিলেন এবং তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেটিই ছিল শান্তি ও বিচক্ষণতার পথ।”
তিনি আরও লেখেন, “ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই দরিদ্র। দুই দেশের জনগণের আসল শত্রু যুদ্ধ নয়, বরং দারিদ্র্য, বেকারত্ব, শিশু অপুষ্টি, পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অভাব। যুদ্ধ শুধু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবে।”
ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যদি ভারত থেকে পাকিস্তানে পানির প্রবাহ বন্ধ বা কমানো হয়, তবে পাকিস্তানের কিছু অঞ্চল ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়তে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ, শাসকশ্রেণি নয়।
সাবেক বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাৎজু শেষ পর্যন্ত দুই দেশের নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান, “আবেগ নয়, বিচক্ষণতা দিয়ে কাজ করুন। শান্তির পথ বেছে নিন, যুদ্ধ নয়।”