তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারে সংঘটিত একটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের পাঁচ সদস্যসহ মোট সাতজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, গুলি, লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার ও বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, পিপিএম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন ও মৌলভীবাজার সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৩০ মিনিটে সদর উপজেলার শেরপুর ঈদগাহ রোড এলাকার বাসিন্দা এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়িতে কয়েকজন ডাকাত ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার (প্রায় ২৩ লাখ টাকা মূল্যমান) এবং নগদ ৬ লাখ ৯ হাজার টাকা লুট করে নেয়। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় একটি বিশেষ টিম অভিযান শুরু করে।
অভিযানে সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে প্রথমে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে রায়হান মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে আরও ছয়জনকে আটক করা হয়—বিশ্বনাথ থেকে আক্কুল মিয়া ওরফে আকুল, নবীগঞ্জ থেকে আফাজ মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে মনর মিয়া, সিলেট শহরের সোবহানীঘাট থেকে অশোক কুমার দে, ওসমানীনগর থেকে তোফায়েল আহমদ তোফা এবং সিলেটের লালদিঘীরপাড় জামে মসজিদ মার্কেট থেকে স্বর্ণালংকার ক্রেতা দিনেশ কর্মকার।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়—
- ২টি দেশীয় তৈরি পাইপগান
- ৬ রাউন্ড কার্তুজ
- একটি হাইড্রোলিক কাটার
- একটি তালা কাটার সাবল
- ডাকাতির সময় ব্যবহৃত মুখোশ
- ৪ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার
- নগদ ৮ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ টাকা
- ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, আটক আক্কুল মিয়া একজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি এবং তার বিরুদ্ধে ৮-১০টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। অপরদিকে তোফায়েল আহমদ তোফা বিভিন্ন জেলায় সংঘটিত ১০-১৫টি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এবং একটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন।
আসামিদের স্বীকারোক্তিতে আরও জানা যায়, তারা গত ২১ এপ্রিল খলিলপুর ইউনিয়নের বাগারাই গ্রামে প্রবাসী আব্দুর রহিমের বাড়িতেও একই কায়দায় ডাকাতি করেছিল। এ ঘটনায় আলাদা আরেকটি মামলা মৌলভীবাজার সদর থানায় রুজু রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাত চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।