রিফাজ বিশ্বাস লালন, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি:
পাবনার ঈশ্বরদীতে রেললাইন থেকে এক ব্যবসায়ীর মাথাবিচ্ছিন দ্বিখন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের উমিরপুর এলাকার ঈশ্বরদী-খুলনা রেললাইনের ওপর থেকে মরদেহ ও মাথা উদ্ধার করে ঈশ্বরদী রেলপুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম বাদশা হোসেন (৫৫)। তিনি উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের যুক্তিতলা গ্রামের মৃত. দেলওয়ার হোসেনের ছেলে। যুক্তিতলার কাদেরের মোড়ে ‘মিঠুন স্টোর’ নামে তার একটি মুদি দোকান রয়েছে। তিনি জমি কেনাবেচা সিন্ডিকেটের সঙ্গেও জড়িত। পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। দুর্বৃত্তরা হত্যা করে রেললাইনে ফেলে ’আত্মহত্যা’ বলে প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে।
নিহতের ছেলে মিঠুন হোসেন গণমাধ্যমকে জানায়, সোমবার রাত ৮টার কিছুপর কে বা কারা দোকান থেকে বাবাকে ডেকে নিয়ে যায়। এর কিছুপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাতস্থান থেকে বাবা তার মোবাইল থেকে জানায়, ’চোখ বেঁধে তাকে কোথাও যেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে”। এরপর মোবাইলের লাইনটি কেটে যায়। তিনি দ্রুত ঈশ্বরদী থানায় গিয়ে পুলিশকে জানান। পর পরিবারসহ আত্মীয়রা আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির সময় উমিরপুর রেললাইনের পাশে মোবাইলের আলো জ্বলতে দেখেন। পরে সেখানে গিয়ে মাথা বিহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। একইসঙ্গে রেললাইনের কিছুদূরে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় মাথাটি পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হন মরদেহটি বাদশা হোসেনের। মিঠুন জানান, মোবাইলে ডাকার পর দুর্বৃত্তরা বাবাকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায় এবং পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে রেললাইনে উপর ফেলে রাখে ’আত্মহত্যা’ হিসেবে প্রচারের জন্য। এ ঘটনায় তিনি মামলা করবেন।
অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে ’ছায়াতদন্ত’ শুরু করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার মুঠোফোনে জানান, ঘটনার আগেই তার ছেলে থানা এসেছিল অভিযোগ জানাতে। এরপর রেললাইনের উপর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে তিনি রাতেই এলাকাটি পরিদর্শন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে রেল পুলিশের পাশাপাশি ঈশ্বরদী থানা ’ছায়াতদন্ত’ করছে। তবে ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত ’হত্যাকাণ্ড’ নাকি, ’আত্মহত্যা’ তা স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার মরদেহটি পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।