বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে ‘কিং মেকার’ বলা হচ্ছে। কারণ, ১০ বছর পর প্রকৃত অর্থে যে এনডিএ সরকার গঠিত হচ্ছে, সেখানে এই দুই নেতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। তাদের কাছে আছে মোট ২৮ জন সাংসদ। ফলে এনডিএ তাদের উপর নির্ভরশীল থাকবে। কিন্তু তাদের সমর্থন শর্তহীন নয়। তাদের দাবির তালিকাটা দীর্ঘ। তারা প্রথম থেকেই সেই দাবিপূরণ করার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের দাবির ক্ষেত্রে নীতীশকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন চন্দ্রবাবু। তিনি পুরো পাঁচেক মন্ত্রণালয় চান। তার মধ্যে আছে গ্রামোন্নয়ন, জলসম্পদ, স্বাস্থ্য, সড়ক পরিবহন, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ।
নীতীশের চাহিদার মধ্যে আছে রেল, গ্রামোন্নয়ন, কৃষি মন্ত্রণালয়।
এছাড়া নীতীশ চান, এনডিএ-কে একটা ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচি নিতে হবে। তার ভিত্তিতেই সরকার চলবে। এর বাইরে থাকা কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে এনডিএ-র বৈঠকে তা অনুমোদন করাতে হবে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ এবং মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-তে একটা অভিন্ন সাধারণ কর্মসূচি ছিল।
সাংবাদিক আশিস গুপ্ত মনে করেন, এই দাবি খুবই সঙ্গত। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ”ন্যূনতম কর্মসূচি আগেও ছিল। আর এখন যেহেতু আর একটা দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, তাই শরিকরাও চাইবে, সরকার যেন এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, যাতে তারা বিপাকে না পড়ে।”
নীতীশের দলের মুখপাত্র ও প্রবীণ নেতা কে সি ত্যাগী বলেছেন, ”অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে মানুষের ক্ষোভ আছে। আমরা চাই এই প্রকল্পের পর্যালোচনা হোক।” অগ্নিবীর হলো চার বছরের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে সেনায় কাজ করার প্রকল্প। এবার নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রেও তা করতে চান নীতীশরা।
বস্তুত গত দশ বছর ধরে এনডিএ-র কথা বলা হলেও তার কোনো আহ্বায়ক নেই, চেয়ারম্যান নেই, কোনো অফিস নেই। দশবছরে মাত্র কয়েকবারই এনডিএ বৈঠক হয়েছে। প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ”এতদিন তো এনডিএ-র শরিকদের সেরকম কোনো ভূমিকা ছিল না। কিন্তু এবার মাত্র দুইটি আসনে জিতে আসা জেডিএস একটা ভালো মন্ত্রণালয় চাইছে। পাঁচটি আসনে জিতে চিরাগ পাসোয়ানের দলের দাবিও তাই। ফলে জোট চালানোর চাপটা এবার ভালো করেই বুঝlতে শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদি।”
ফলাফল বেরোনোর পর মোদি বিজেপি সদরদপ্তরে গিয়ে য়ে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে একবারের জন্যও মোদি সরকার বলেননি। বলেছে এনডিএ সরকার। মোদিও কি বদলাতে শুরু করেছেন?
সংসদীয় দলের বৈঠক
আজ শুক্রবার বিজেপি-র সংসদীয় দলের বৈঠক। সেখানে নবনির্বাচিত সব সাংসদ, দলের মুখ্যমন্ত্রী, উপ মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় পদাধিকারীরা থাকবেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হবেন মোদী। তারপর তিনি সরকার গড়ার আর্জি জানাবেন রাষ্ট্রপতির কাছে।