পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের পর আজ বৃহস্পতিবার বাসায় ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের তাঁর বাসা ফিরোজায় পৌঁছান।
দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে বিএনপি নেত্রী রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে শারীরিক কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দীর্ঘ ১৫৬ দিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে আজ বিকেল ৫টায় হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া। তাঁকে বহন করা গাড়িটি হাসপাতাল থেকে ৩০০ ফুট সড়ক, কুড়িল উড়ালসড়ক, শেওড়া বাসস্ট্যান্ড হয়ে বনানী কবরস্থান সড়ক দিয়ে গুলশানের বাড়িতে যায়।
বিএনপির ফেসবুক পেজের লাইভে দেখা যায়, খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ির সামনে শত শত মোটরসাইকেলে করে হাজারো নেতা-কর্মী ছিলেন। তাঁরা মিছিল করতে করতে খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে যান। এ সময় নেতা-কর্মীরা সরকার ও নির্বাচনবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা, পুরোটা পথ নেতা-কর্মীরা সড়কে থেমে থেমে এভাবে স্লোগান দেন। এতে বিমানবন্দর সড়কের রাজধানীমুখী অংশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
গতকাল বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বৈঠক করেন গত মঙ্গলবার রাতে। সেই বৈঠকে তাঁর স্বাস্থ্যের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাসায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তাঁর রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এখন তাঁর স্বাস্থ্য অনেকটা স্থিতিশীল, তাই তাঁকে বাসায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।