চট্টগ্রামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ ৪২৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী মামুন আলী মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে তিনি মামলাটি করেন। তবে এই মামলা নিয়ে হট্টগোল হয়, উত্তপ্ত হয় আদালত কক্ষ।
আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগ নিয়ে বাদীর বক্তব্য নেওয়ার পর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ সময় আদালতে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক সাবেক সেতু ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, নগর গোয়েন্দা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত, নগরের হালিশহর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব কুমার চৌধুরী, আওয়ামী লীগের নেতা এরশাদুল আমীন, হালিশহর থানার তৎকালীন এসআই জামাল উদ্দিন, মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।
মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট হালিশহর এলাকায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। ওই সময় হালিশহর থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন এবং বাদীসহ বিএনপির ১৭ কর্মীকে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। বাদীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়, যা তার বাবার কাছে পাঠানো ভিডিওর মাধ্যমে জানানো হয়। বাদীর বাবা ৭ লাখ টাকা দেন। এছাড়া ঘটনার দিন ওসি প্রণব চৌধুরী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে ভিডিও কল দিয়ে বাদীর নির্যাতনের ছবি দেখান। পরে বাদী জামিনে বেরিয়ে এলে কয়েক দফায় তাকে থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
বিচারককে এজলাসে হট্টগোল ও কটূক্তির মুখে পড়তে হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার দাবি জানালে, বিচারক দুই ঘণ্টা পর ফের এজলাসে ফিরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আইনজীবীরা মক্কেলের দাবি আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে পারেন, তবে তা আইনের সীমার মধ্যে থাকতে হবে। আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান জানানো উচিত।