গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন দীর্ঘ দেড় দশকের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা।
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি এক ব্যক্তির সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনে শেখ হাসিনা দাবি করেছেন যে, তিনি পদত্যাগ করেননি। তিনি যেকোনো মুহূর্তে দেশে ঢুকে পড়বেন। শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ও একাধিকবার দাবি করেছেন যে, তার মা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। তাছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো দাবি করছেনই।
এমতাবস্থায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দেয়। এই নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে লেখা শেখ হাসিনার পদত্যাগের একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ওই চিঠিতে শেখ হাসিনা লেখেন, আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাই যে, সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আর কোনো প্রাণহানি এড়ানোর জন্য আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি।
তিনি আরও লেখেন, এ ঘটনাগুলোতে আমি সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্বীকার করছি এবং এ দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণের প্রতি আমার অঙ্গীকার সবসময় অটুট থাকবে।
পদত্যাগপত্রে শেখ হাসিনা লেখেন, গত পনেরো বছর ধরে আমি আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, যা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রমাণ করছে যে, এ মুহূর্তে দেশকে এগিয়ে নিতে অন্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। আমি আশা করি, আমার পদত্যাগ বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন পথ খুলে দেবে এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।”
চিঠির শেষ দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেখেন, এই কঠিন সময়ে আমার সরকার যা কিছু করেছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত। আমি সব বাধ্যবাধকতা মেনে নিচ্ছি এবং এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বৃহত্তর স্বার্থে নিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দুপুরে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে বোন রেহানাকে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। আর সেখানেই বর্তমানে তিনি অবস্থান করছেন।