বাংলাদেশের পাসপোর্টের ইতিহাস:
বাংলাদেশের পাসপোর্টের ইতিহাস মূলত পাকিস্তান আমল থেকে শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর, পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানের অংশ ছিল, এবং তখনকার সরকার নাগরিকদের পাসপোর্ট প্রদান করত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, দেশের জন্য একটি নতুন পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়ে ওঠে।
স্বাধীনতার পর, ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো নিজস্ব পাসপোর্ট চালু করে, যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করা হত। প্রথমদিকে, পাসপোর্ট প্রক্রিয়া ছিল ম্যানুয়াল এবং সময়সাপেক্ষ। পরে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) চালু করে, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর ফলে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ আরও সহজ ও নিরাপদ হয়ে ওঠে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্টও চালু করেছে, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আসে এবং বিশ্বের অনেক দেশে ভ্রমণকারীদের জন্য সুবিধাজনক পাসপোর্ট সেবা প্রদান করছে।
বাংলাদেশে পাসপোর্টের ধরনগুলো কি?
পাসপোর্টের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, এবং প্রতিটি ধরন ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত, নিম্নলিখিত পাসপোর্টের ধরনগুলো দেখা যায়:
- সাধারণ পাসপোর্ট (Ordinary Passport)
সাধারণ নাগরিকদের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা ভ্রমণ এবং ব্যক্তিগত কাজে আন্তর্জাতিক যাতায়াতের জন্য দেওয়া হয়। এটি সবচেয়ে প্রচলিত পাসপোর্ট। - অফিশিয়াল পাসপোর্ট (Official Passport)
সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ইস্যু করা হয়, যারা সরকারি কাজে বা ডিউটিতে বিদেশে যান। এটি সরকারি কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। - ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট (Diplomatic Passport)
রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক কর্মচারী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ব্যবহৃত হয়। কূটনৈতিক সুবিধা এবং ইমিউনিটি পেতে এটি গুরুত্বপূর্ণ। - ইমার্জেন্সি পাসপোর্ট (Emergency Passport)
জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত বিদেশ ভ্রমণের প্রয়োজন হলে ইস্যু করা হয়। এটি অস্থায়ী এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বৈধ থাকে। - ই-পাসপোর্ট (E-passport)
একটি আধুনিক পাসপোর্ট যা ডিজিটাল চিপের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করে। ই-পাসপোর্টে অধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে এবং এটি আন্তর্জাতিক মান অনুসারে তৈরি।
এছাড়াও, বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বিশেষ পাসপোর্ট থাকতে পারে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বা ভ্রমণকারীদের জন্য।