দেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে সম্পদের পাহাড় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যে তার সম্পত্তির ফিরিস্তি। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ নামের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান শুধু যুক্তরাজ্যেই ৩৬০টি বাড়ির মালিক। এর বেশির ভাগই বার্কলি গ্রুপের মতো শীর্ষস্থানীয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা। বাড়িগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য ৩২ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাইয়েও বিপুল সম্পদ রয়েছে তার। এর মধ্যে দুবাইয়ে ২০২০ সালের মধ্যে অন্তত ৫৪টি সম্পদের মালিক হন। যুক্তরাষ্ট্রে তার নয়টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। অ্যাপার্টমেন্টগুলোর মধ্যে নিউইয়র্কের অভিজাত এলাকা ম্যানহাটনে পাঁচটি ও নিউ জার্সিতে চারটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাইফুজ্জামান দেশের বাইরের এই সম্পদের তথ্য তার নির্বাচনী হলফনামা ও ট্যাক্স ফাইলে গোপন করেছেন।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, লন্ডনে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ দেখাশোনা করেন চট্টগ্রামের রিপন মাহমুদ।
রিপনকে সঙ্গে নিয়ে একদিন সাইফুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর লন্ডনের বাড়িতে সাক্ষাৎ করে অনুসন্ধানী দল। সেখানে সাইফুজ্জামান জানান, তিনি ব্যবসা থেকে তাঁর সব লাভ দুবাই ও লন্ডনে বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুবাইয়ের ডাউনটাউনে আমি সেরা সম্পত্তি পেয়েছি। দুবাই মলের কাছে অপেরা এলাকায় আমার খুব সুন্দর একটি পেন্ট হাউস আছে। আমি একটি ভিলাও কিনেছি, যার একটায় ব্যক্তিগত হ্রদ আছে। সবকিছু আছে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি আছে। ম্যানহাটানে (যুক্তরাষ্ট্র) আমার খুব সুন্দর সম্পত্তি আছে।’
বাংলাদেশ থেকে এত টাকা কীভাবে আনলেন, এ প্রশ্নের জবাবে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমার দুবাইয়ে রিয়েল স্টেট কেনাবেচার ব্যবসা আছে। দুবাই থেকে এখানে টাকা আনি। তারপর এখান থেকে একটা ঋণ নিই।’
এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে তার ব্যবসার কথা জানতেন উল্লেখ করে সাইফুজ্জামান আল-জাজিরার অনুসন্ধানী দলকে বলেছেন, ‘আমার এখানে ব্যবসা আছে, সেটা তিনি জানতেন।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে। সাইফুজ্জামানের বর্তমান অবস্থান অজানা। তবে বাংলাদেশ ছেড়েছেন বলে সাম্প্রতিক একটি কথোপকথনে তিনি উল্লেখ করেছেন।