মোঃনাজমুল আহসান, আমতলী বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনাআমতলীতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের মালামাল উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. একেএম সামসুদ্দিন শানু মালামাল নিয়ে গেছে এমন অভিযোগ করেন কমপ্লেক্সের সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মাঞ্জুরুল হক কাওসার।
এ ঘটনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম।
জানাগেছে, ২০২০ সালে আমতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পরিচালনার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহবায়ক ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে সদস্য সচিব করে কমিটি ঘোষনা দেয় সরকার। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. একেএম সামসুদ্দিন শানু আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের চাবি কমিটির কাছে হস্তান্তর করেনি।
গত চার বছর ধরে সাবেক কমান্ডার নিজের ইচ্ছামত কমপ্লেক্স দেখভাল করেছেন বলে অভিযোগ করেন সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মাঞ্জুরুল হক কাওসার। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ছাত্র-জনতা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলে।
এ সুযোগ নিয়ে উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাড. একেএম সামসুদ্দিন শানু কমপ্লেক্সের গুরুত্বপুর্ণ মালামাল সরিয়ে ফেলেন বলে আরো অভিযোগ করেন সদস্য সচিব মোঃ মাঞ্জুরুল হক কাওসার।
এরপর গত ১৫ সেপ্টেম্বর সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শানু ছাত্র- জনতার হাতে মুক্তিযোদ্ধা ভবনের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ও সদস্য সচিব মোঃ মাঞ্জুরুল হক কাওসারকে দেন। এতে দেখা যায় কম্পিউটার , ল্যাপটপ, স্লিং ফ্যান ৫ টি, কাপ-প্রিচ ৪৮ টি, জগ ২ টি, কলস ১টি, গ্লাস ১৫ টি, ট্রে ২ টি, ছোট প্লেট ১২ টি, বড় প্লেট ২৪ টি, বাটি ৬ টি, চামচ ৩০ টি, তোয়ালে ১২ টি ও র্যাক ১টি নিয়ে গেছে।
এ ঘটনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব মোঃ মাঞ্জুরুল হক কাওসারের অভিযোগ সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাড.একেএম সামসুদ্দিন শানু আওয়ামীগের প্রভাব খাটিয়ে ২০২০ সালে সরকার কর্তৃক ঘোষিত কমিটির কাছে কমপ্লেক্স ভবনের চাবি দেয়নি।
তার আরো অভিযোগ ৫ আগষ্ট ছাত্র- জনতার আন্দোলনের সরকার পতনের প্রায় দের মাস পরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা আমাকে ধরিয়ে দেয়। তাকে (কমান্ডার) বেশ কয়েকবার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে থানার সাধারণ ডায়েরি করতে বলা হলেও তিনি ডায়েরি করেননি। তিনি আরো বলেন, নিজেই (কমান্ডার) মালামাল সরিয়ে এখন ছাত্র-জনতার নিয়ে গেছে বলে দাবী করছেন তিনি। বাস্তবিক পক্ষে ছাত্র-জনতা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে হামলাই করেনি।
উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অ্যাড.একেএম সামসুদ্দিন শানুর মুঠোফোনে (০১৭১৩৯৫৬৮৯৯) বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক হাসান বলেন, তদন্ত করে যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের মালামাল উধাও’র ঘটনা ঘটেনি। ধারনা করা হচ্ছে যার কাছে (সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার) চাবি ছিল তার কর্তৃকই এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।