শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার প্রায় তিন মাস হতে চলল। শেখ হাসিনা নিজেই কিছুদিন আগে গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জানিয়েছেন যে, তিনি পদত্যাগ করেননি। যে কোনো সময় চট করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়বেন। এর পর মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে সাবেক একনায়ক হাসিনা সত্যিই কি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করে থাকলে তার পদত্যাগপত্রই বা কার কাছে?
শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানদের সামনে রেখে বলেছিলেন- ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি’। রাষ্ট্রপ্রধানের এই দ্বিমুখী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, ৫ তারিখের পর থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। শেখ হাসিনা বারবার ফোন রেকর্ড ছেড়ে দিচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা মিছিল করছে। বর্তমান রাষ্ট্রপতি অতীতে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ করেছেন। সে ফ্যাসিবাদ কায়েমে জড়িত ছিলেন। নানাভাবে রাষ্ট্রপতি পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা করছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি দুরকম কথা বলছেন।
ইসলামি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মো. জাহিদুল ইসলাম রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করে বলেন, একজন রাষ্ট্রপতি হয়ে দুরকম কথা বলতে পারেন না। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. রাশেদ খান বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং রাষ্ট্রপতি নিজে গ্রহণ করেছেন এটা নিজেই বলেছেন।
তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট রাষ্ট্রপতি আবারও একটি ‘কু’ করার চক্রান্ত করছে। জনগণ এখনও সচেতন এবং রাস্তায় আছে। কোনো অবৈধ চেষ্টা করলে জনগণ তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।
রাশেদ আরও বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত। এবং এখনও তার হয়েই কাজ করছে। আমি সরকারকে অনুরোধ করব তাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য। কোনো আইন মেনে বিপ্লব হয়নি। তাই কোনো আইনের দোহায় না দিয়ে ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়া দরকার। বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে না সরালে তিনি শেখ হাসিনার হয়ে কাজ করবে।