বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল জনাব অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে প্রদত্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন ।
আইনজীবী শিশির মনির বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে প্রদত্ত আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে রিভিউ আবেদন দায়ের করেছেন সেক্রেটারি জেনারেল জনাব অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।’
২০১১ সালে জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ সংবিধানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়।
২০১১ সালের ১০ই মে আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে এক সংক্ষিপ্ত আদেশে বলেছিল, জাতীয় সংসদ চাইলে আরো দুইটি নির্বাচন (দশম ও এগারতম) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে।
সংক্ষিপ্ত ওই রায়ে আরো বলা হয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের বিচারপতিদেরকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না বলে সংবিধানের সংশোধনের জন্য মত দেয় আপিল বিভাগ।
ওই সংক্ষিপ্ত আদেশের ১৬ মাস পরে ২০১২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর যখন পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয় তখন এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি পদ থেকে অবসর নেন। তিনি যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন তাতে পরবর্তী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকার বিষয়টি ছিল না।
এমনকি, সরকারের মেয়াদ শেষ হলেও সংসদ বহাল থাকার কথাও যুক্ত হয় পূর্ণাঙ্গ রায়ে। সংক্ষিপ্ত রায়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের এই বিশাল অসংগতি নিয়ে তখনই জোরালো বিতর্ক উঠেছিল।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে একমত হয়েছেন বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা এবং বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।
তবে বিচারপতি মো. ইমান আলী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে মত না দিয়ে বিষয়টি জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেন।