বাংলাদেশ থেকে এক সেনজেন ভিসা নিয়ে ইউরোপের ২৬টি দেশ ভ্রমণের সুযোগ সত্যিই এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হতে পারে। সেনজেন ভিসা মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি ভিসা ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে আপনি সেনজেন অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে ভিসা পুনরায় প্রয়োজন ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ভিসা ব্যবস্থাটি ১৯৮৫ সালে চালু হয়েছিল এবং বর্তমানে ২৬টি দেশ এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
সেনজেন ভিসা কীভাবে পাবেন?
বাংলাদেশ থেকে সেনজেন ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ, তবে কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত ও কাগজপত্র পূরণ করতে হবে। প্রথমে সেনজেন অঞ্চলের যে কোনো দেশের দূতাবাস বা ভিসা সেন্টারে আবেদন করতে হবে। ভিসার জন্য আবেদন করার সময় যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন তা হলো:
- পাসপোর্ট: পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে।
- ভ্রমণ বিমা: ইউরোপে ভ্রমণের সময় যেকোনো মেডিকেল বা জরুরি প্রয়োজনে বিমা করা বাধ্যতামূলক।
- হোটেল এবং ফ্লাইট বুকিং: পুরো ভ্রমণের সময়কাল ধরে হোটেল বুকিং এবং ফ্লাইটের নিশ্চিতকরণ দিতে হবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট: ভ্রমণের সময় নিজেকে আর্থিকভাবে সচ্ছল প্রমাণ করতে ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
সেনজেন ভিসার মেয়াদ ও সীমাবদ্ধতা
সেনজেন ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৯০ দিনের হয় এবং এই মেয়াদের মধ্যে আপনি একাধিক সেনজেন দেশ ভ্রমণ করতে পারেন। তবে ৯০ দিনের বেশি থাকার প্রয়োজন হলে সেই ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের ভিসার আবেদন করতে হবে। ১৮০ দিনের মধ্যে ৯০ দিন থাকার অনুমতি এই ভিসার মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে পর্যটকরা সহজেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে দেখতে পারেন।
সেনজেন অঞ্চলভুক্ত দেশগুলো
সেনজেন ভিসা নিয়ে আপনি যেসব দেশে ভ্রমণ করতে পারবেন সেগুলো হলো: ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, গ্রিস, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া, পর্তুগাল, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, সুইডেন, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, আইসল্যান্ড এবং লিচটেনস্টেইন। এই দেশগুলোর প্রতিটিরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও আকর্ষণ রয়েছে, যা প্রতিটি ভ্রমণকারীর জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা হতে পারে।
ভ্রমণকারীদের জন্য পরামর্শ
সেনজেন অঞ্চলে ভ্রমণ করার সময় প্রতিটি দেশের আইন-কানুন মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া স্থানীয় সংস্কৃতি ও ভাষা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকা ভালো, কারণ এটি আপনার ভ্রমণকে আরো আনন্দদায়ক করে তুলবে। ইউরোপের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, ঐতিহাসিক স্থান এবং আধুনিক স্থাপত্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
বাংলাদেশ থেকে এক ভিসাতেই ইউরোপের এতগুলো দেশ ভ্রমণ করা সত্যিই উত্তেজনাপূর্ণ। সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে আপনি এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।