যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি চারটি বিদেশি ভাষার অন্যতম হিসেবে নিউইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে রয়েছে বাংলাও। এশীয়-ভারতীয় ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলাই প্রথম ছাপা হলো নিউইয়র্কের ব্যালট পেপারে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা বোর্ড অব ইলেকশন্সের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য শাখার নির্বাহী পরিচালক মাইকেল জে রায়ান সোমবার (৫ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিউইয়র্কের প্রধান শহর নিউইয়র্ক সিটিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে রায়ান বলেন, অভিবাসী ভোটারদের সুবিধার জন্য ব্যালট পেপারে ইংরেজির পাশাপাশি ৪টি ভাষা অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড অব ইলেকশন্স নিউইয়র্ক শাখা। এই ভাষাগুলো হলো চীনা, স্প্যানিশ, কোরিয়ান ও বাংলা।
নিউ ইয়র্কে বাংলাভাষী বহু মানুষের বাস। যাদের সিংহভাগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রদেশে এক লাখেরও বেশি বাংলাভাষী মানুষ বসবাস করেন। নিউ ইয়র্কে বাঙালিদের বসবাস মূলত ব্রুকলিন, কুইনস ও ব্রঙ্কসে। ব্রুকলিনের কেনসিংটন এলাকার একাংশকে স্থানীয়েরা ‘ছোট বাংলাদেশ’ বলে ডেকে থাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রে যত বাঙালি বসবাস করেন, তাদের ৪০ শতাংশেরই বাস নিউইয়র্কে। সামগ্রিক ভাবে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন লাখেরও বাংলাদেশী। এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশি ভোটারদের সুবিধার্থেই ব্যালটে বাংলা ভাষা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউইয়র্ক প্রশাসন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রয়েছে। ২০২০ সালে যেমন হিন্দিভাষী ভোটারদের কথা মাথায় রেখে ইলিনয় প্রদেশের ব্যালটে অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে হিন্দিও রাখা হয়েছিল।
ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে মাইকেল জে রায়ান বলেন, আমি বুঝতে পারছি যে ব্যালট পেপারের জন্য অন্যান্য ভারতীয় ভাষাকে বাদ দিয়ে শুধু বাংলাকে বেছে নেওয়ায় অন্যান্য ভাষাভাষী ভারতীয়রা হয়ত মনঃক্ষুন্ন হতে পারেন, কিন্তু এটা ছাড়া আমাদের সামনে কোনো গত্যন্তর ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার অধিকার আইন, ১৯৬৫- এর আওতায় দুবছর আগে নিউইয়র্কের আদালতে একটি মামলা করা হয় । মামলাকারীদের দাবি ছিল, নিউইয়র্কে যেসব অঞ্চলে অভিবাসীদের সংখ্যা বেশি, সেসব অঞ্চলে ইংরেজির পাশাপাশি অন্তত একটি অভিবাসী ভাষায় ব্যালট পেপার দেওয়া হোক।