যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেবেন দুই মাস পর। দায়িত্ব নেওয়ার দিনই তিনি বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ দেবেন। হোয়াইট হাউসে পা দেওয়ার প্রথম দিনেই অবৈধ অভিবাসীদের ওপর চড়াও হবেন তিনি। অভিবাসীদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, সেগুলোও বাতিল করবেন ট্রাম্প।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবিতে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থীও ছিলেন। এসব ছাত্র-ছাত্রীসহ যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী মার্কিন ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন, তাদের স্বদেশে ফেরানোর বিষয়টিও অগ্রাধিকার তালিকায় থাকতে পারে।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালেই দেশটিতে অবৈধভাবে এক কোটি ১০ লাখ অভিবাসী বসবাস করছিলেন। দুই বছর পর এই সংখ্যা আরও বেড়েছে। নিউইয়র্ক, শিকাগো ও ডেনভারের মতো অনেক শহরে এসব অভিবাসীকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের আবাসনের ব্যবস্থা ও আর্থিক সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এসব শহরের কর্তৃপক্ষ।
এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের বড় প্রতিশ্রুতি ছিল অবৈধ অভিবাসী তাড়ানো। তার অভিযোগ, বাইডেন সরকার বিপুলসংখ্যক অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিয়েছে। যদিও বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী গ্রেফতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। আর সীমান্তসংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোর করায় চলতি বছরে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের হারও নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তিনটি সূত্রের বরাতে দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে অতীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িত নেই, এমন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা বাড়বে মার্কিন কেন্দ্রীয় অভিবাসন কর্মকর্তাদের। একই সঙ্গে মেক্সিকো সীমান্তে মার্কিন সেনার সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং এই সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু হবে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে আমেরিকায় লাখ লাখ অভিবাসীকে বৈধভাবে প্রবেশের সুযোগ দিতে মানবিক প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন জো বাইডেন। নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সেই প্রকল্প বাতিল করতে পারেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যেসব অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাদের স্বেচ্ছায় দেশটি ত্যাগ করতে উৎসাহ করবেন ট্রাম্প।
তবে এতেও সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প। অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আরও কমাতে চান তিনি। গত রোববার মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টম হোম্যানকে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। একজন কট্টর অভিবাসীবিরোধী কর্মকর্তা হিসেবে হোম্যানের পরিচিত রয়েছে।