২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানোর কারণ জানালেন

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ছবি সরানোর কারণ ব্যাখ্যা করে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন ।

‘পতিত শেখরা!

শেখ মুজিব ও তার কন্যা (আরেকজন শেখ) তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্য জনগণের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন। তাদের একমাত্র পার্থক্য, শেখ মুজিব একসময় পূর্ব বাংলার গণমানুষের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, যে জনপ্রিয়তা হাসিনার ছিল না। জনগণ পাকিস্তানি নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার (শেখ মুজিব) নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন, কিন্তু একাত্তরের পর তিনি নিজেই একজন নির্যাতনকারী হয়ে ওঠেন। মুজিববাদের প্রতি তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পর পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। নিজের ফ্যাসিবাদী ভূমিকার কারণে ১৯৭৫-এ তার মৃত্যুতে মানুষের শোক-অনুতাপ ছিল না।

তবে, শেখ তার একাত্তর-পূর্ব ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন, যদি শেখের একাত্তর-পরবর্তী গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, দুর্নীতি, দুর্ভিক্ষ ও নিশ্চিতভাবেই বাহাত্তরের সংবিধান, যা বাকশাল প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল-এসবের জন্য তার দল ও পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চান। শেখ-কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কথাও তাদের স্বীকার করা, ক্ষমা চাওয়া এবং এ জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত (শেখ মুজিবকে একজন ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসের পাত্র বানিয়েছিলেন তিনি)। তাদের আরও উচিত, মুজিববাদী রাজনীতি ও শেখ পরিবারের বন্দনা পরিহার করা।’

তিনি আরও লেখেন, ‘কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে শেখের ছবি সরানো হয়েছে (কর্মকর্তারা সরিয়েছেন) যে শাসন মেয়ে করেছেন ফ্যাসিবাদী বাবার নামে ও তার একাত্তর-পরবর্তী চেতনার কথা বলে। তার বাবাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল, কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে তাদের দুজনের ছবি, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলেছেন।’

কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, তবে তিনি এ গণ-অভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন বলেও উল্লেখ করে মাহফুজ আলম।

নতুন এই উপদেষ্টা আরও লেখেন,‘আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না। আমরা এখানে এসেছি, ঐতিহাসিক অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো দূর করতে। মনে রাখতে হবে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের। আবার, কোনো মুক্তিযোদ্ধাও যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন, তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত। স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন বলেই তাদের (একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করা মুক্তিযোদ্ধাদের) এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া উচিত নয়।বাংলাদেশের শাসক পরিবারগুলোকে দেবতুল্য করা ও ক্ষমতাসীন পরিবারগুলোর সবকিছু নিজেদের বলে মনে করা-এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ৪৭ ও ৭১-এর পাশাপাশি জুলাইয়ের চেতনা আমাদের সবার স্মৃতিতে থাকুক অম্লান!’

 

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

মামুনুল হক ইসলামী বিপ্লবের পূর্বাভাস দিলেন

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ইসলামী বিপ্লবের পূর্বাভাস দিয়েছেন । তিনি বলেন, ৫ আগস্টে বিপ্লবের অন্যতম শক্তি হলো বাংলার তৌহিদী জনতা।  এই

তেল আবিবে হিজবুল্লাহর ২৫০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র আন্দোলন হিজবুল্লাহ ইসরাইলের অভ্যন্তরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে । গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে বলেছে তারা প্রথমবারের মতো, দক্ষিণ ইসরাইলের আশদোদ নৌ ঘাঁটিতে এক ঝাঁক

পাতানো নির্বাচন করায় তিন নির্বাচন কমিশনকে বিচারের সুপারিশ

বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষক সমাজ মত দিয়েছেন – ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে পাতানো নির্বাচন করে তিন নির্বাচন কমিশন শপথ ভঙ্গ এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।

ফ্রিজ করা ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার পতনের পর প্রায় সাড়ে ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে । এসব অ্যাকাউন্টে জমা আছে

Scroll to Top