তিন শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন । বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা এ অনশন শুরু করেন।
অনশনে বসা তিন শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মাসুম, ফোকলোর বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়া শুভ এবং পপুলেশন সায়েন্স ও হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী মারুফ। তাদের সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী সংহতি জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ দিকে শুক্রবারও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা পিছিয়ে পড়া কোনো জনগোষ্ঠী নন। তারপরও তাদের সন্তানদের কেন পোষ্য কোটা প্রয়োজন হবে? বর্তমান প্রশাসন এ ব্যাপারে নানা রকম যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন কিন্তু তাদের ন্যায্য দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
মেহেদী মারুফ বলেন, গতকাল ও আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা পোষ্য কোটার বিষয়ে বেশ কিছু যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছি, এখানে প্রশ্ন হচ্ছে ন্যায্যতার। আমাদের দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক। ১ শতাংশ পোষ্য কোটা থাকলেও আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। একপর্যায়ে তারা আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটি প্রত্যাখ্যান করেন।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ভর্তির যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটা ভর্তি কমিটি আছে। এখানে ইনস্টিটিউট, বিভাগীয় প্রধান, ডিন, সিন্ডিকেট সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় ৯০ জন সদস্য আছেন। কোটার এই সিদ্ধান্ত ভর্তি কমিটিরই সিদ্ধান্ত। উপাচার্য একা একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারেন না। কোনো সিদ্ধান্ত যদি আমরা চাপিয়ে দিই, তবে আমরাও ফ্যাসিস্ট প্রশাসনে পরিণত হবো।
তিনি বলেন, আমরা কোটার যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনার পক্ষে। সবাই মিলে যদি একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি, সেটি আরও বেশি সুন্দর হয়। আমাদের ছেলেরা যে দাবি করছেন, আমরা তাদের সঙ্গে একমত এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। তবে পোষ্য কোটা একেবারেই না রাখার পক্ষে শিক্ষার্থীরা।