যশোরের শার্শা সীমান্তে ভারত যাওয়ার পথে গাজীপুরের টঙ্গীর ৪৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও গাজীপুর সিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। এক লাখ টাকায় চুক্তি করে তিনি ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৯ মিনিটে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, আসাদুর রহমান কিরণ ভারতে পালানোর সময় যশোরের শার্শা থানাধীন শিকারপুর সীমান্ত থেকে বিজিবি তাকে আটক করে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টাকা ও ক্ষমতা খেকো হিসেবে গাজীপুর মহানগরের মানুষ কিরণকে চেনে। বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক কিরণের দেশে-বিদেশে একাধিক বাড়ি ও দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ রয়েছে। টঙ্গী, গাজীপুর ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় কিরণের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে।
যশোরে দায়িত্বরত বিজিবির ৪৯ ব্যাটালিয়ন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গাজীপুর মহানগরীর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এবং সাবেক প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণকে আটক করে বিজিবি।
৪৯ বিজিবি সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, অত্র ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ শিকারপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে। এ প্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টায় বিজিবির শিকারপুর বিওপির টহল দল মেইনপিলার ২৮/১-এস থেকে আনুমানিক ১০০ গজ বাংলাদেশ ভেতরে বেতনা নামকস্থান এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি।
এ সময় অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় গাজীপুর মহানগরীর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৪৩নং ওয়ার্ডের সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এবং সাবেক প্যানেল মেয়র আসাদুজ্জামান খান কিরণকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- স্থানীয় মানবপাচারকারী যশোর জেলার শার্শা থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের নুর নবীর মাধ্যমে এক লাখ টাকা চুক্তির বিনিময়ে ভারতে যাওয়ার জন্য সীমান্ত এলাকায় আসেন। এছাড়া আটক আসামির বিরুদ্ধে গাজীপুর থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা ও শার্শা থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কিরণ গাজীপুর সিটি করেপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড টঙ্গীর সাবেক কাউন্সিলর ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই বারের ভারপ্রাপ্ত মেয়র। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে কিরণ কাউন্সিলর হন। সেই মেয়াদে নির্বাচিত মেয়র বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নানকে মিথ্যা মামলায় জেলে দিয়ে কিরণ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বে বসেন। মেয়র মান্নান জামিন পেলেও একাধিকবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে ২৭ মাস দায়িত্ব পালন করেন কিরণ। পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম মেয়র হলে ২০২১ সালে তাকে সরিয়ে আবার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে তিনি চেয়ারে বসেন। দুই মেয়াদে প্রায় একটি পূর্ণ সময়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।