শিবগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধিঃ
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ফ্যাসিট ব্যাতিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব বৃন্দ প্রথম প্রহরে শিবগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় প্রথমে দুই গ্রুপের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোষরদের নিয়ে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। উপজেলা প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)থামানোর চেষ্টা করেন। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এর সাথে ফ্যাসিট আওয়ামী লীগের দোষরেরা ছিল, অপর পক্ষের নেতাকর্মীরা বাধা দিতে গেলে তাদের প্রতি তারা প্রথমে আক্রমণ করেন। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এর সাথে ছিলেন মোকামতলা ইউনিয়ন আওয়ামী যুব লীগের সাবেক সভাপতি মোঃ এনামুল হক।মূল বিষয় টি এনামুল কে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়েছে।
বর্তমানে এনামুল হক উপজেলা নাগরিক ঐক্যের যুগ্ন আহ্বায়ক। শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে বিএনপির একাধিক গ্রুপ সহ একাধিক দলের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আহত নাগরিক ঐক্যের শিবগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলামের অনুসারীরা ও বিএনপির অপর পক্ষের নেতারা, বগুড়া জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এবং শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলমের অনুসারীদের দোষারোপ করছেন।
আহত শহিদুল ইসলাম কে রাতেই শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় তেমন কোন জটিল সমস্যা হয়নি,শরীরের কিছু জায়গায় কেটেছে, দুই তিন দিন পরে বাড়িতে যেতে পারবেন। গত রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে, যেখানে দেখা যায় একজন মেয়ে চিৎকার করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি কে দোষারোপ করছেন ও পাশেই শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে দেখা যাচ্ছে, খোঁজ নিয়ে মেয়েটির বিষয়ে জানাযায় সে আহত শহিদুল ইসলামের স্ত্রী লিপি, সে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স ও শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত সুমাইয়া মোস্তাকিম ক্লিনিকের মালিক।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানাযায় হঠাৎ করেই এরুপ ঘটনার সুত্রপাত হয়েছে, তিনি আরও বলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সামনে ছিলাম, পিছনের দিক থেকে শুনা যাচ্ছিলো কোন ফ্যাসিট আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়ে আমরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দিবো না।
আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে নাগরিক ঐক্যের কোন সম্পর্ক আছে কি না এ বিষয়ে সারাদিন অনুসন্ধান করে যে সব তথ্য পাওয়া যায় তা হলো, শিবগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১ টিকে পৌরসভা, প্রত্যেক ইউনিয়নে ৫ই আগষ্ট ২০২৪ সালের পরে কমিটি করা হয়েছে। রায়নগর ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক-সাবেক মেম্বার ও ৪নং ওর্য়াড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং সদস্য সচিব মোঃ বাদল মেম্বার -২নং ওর্য়াড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
সৈয়দপুর ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বকুল মেম্বার, সাবেক বিএনপির নেতা এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব -ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। ময়দান হাটা ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি হিরা -বর্তমান উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক ও রমজান চেয়ারম্যানের ছেলে।
দেউলি ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি শ্রী উজ্জ্বল সরকার -ওর্য়াড আওয়ামী লীগের কমিটিতে ছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদক সুজা মেম্বার বিএনপির কর্মী ছিলেন। মোকামতলা ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হলেন উপজেলা নাগরিক ঐক্যের যুগ্ন-আহ্বায়ক মোঃ এনামুল হকের সাবেক সহযোগী, এনামুল হক মোকামতলা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি। শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক মোঃ লুৎফর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা লিওনের একটা নম্বর সহযোগী।
বুড়িগঞ্জ ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী জাতীয় পার্টির নেতা ও সুখী সংস্থা নামের একটি সুদের প্রতিষ্ঠানের কারিগর এবং সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের কর্মী।
পিরব ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মতিয়ার আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির নেতা ও সাধারণ সম্পাদক গোলাপ বিএনপির সমর্থক। মাজিহট্র ইউনিয়নের নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মোঃ ফারুক বিএনপির সমর্থক হলেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট করেছিলো। উপজেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য সচিব বাদশা ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের ১নংযুগ্ন আহ্বায়ক, যার নেতৃত্বে বিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে বিহার ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের কমিটি গঠন করেছেন ও বাদশা বিহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী হিসেবে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অদ্য বিকালে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম আহত শহিদুল ইসলাম কে হাসপাতালে দেখতে যান ও চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন গতকালের ঘটনায় আওয়ামী লীগের দোসরদের সহযোগিতা থাকতে পারে ও যদি বিএনপির কোন নেতা কর্মী জরিত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে