কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভক্তিভরে আয়োজন হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শিবচতুর্দশী ব্রত। এদিন এ উপলক্ষ্যে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গীতা দান করা হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার দোতালার অস্থায়ী প্রার্থনা কক্ষে বিকেল ৫টায় সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত হয় এই গীতাদান অনুষ্ঠান ও মহাশিব চতুর্দশী ব্রত।
উক্ত গীতাদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. হায়দার আলী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয় চন্দ্র রাজবংশী। উক্ত গীতাদান অনুষ্ঠানে উপাচার্য ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আগে সনাতনীদের কোনো প্রার্থনার কক্ষ ছিল না। আমি আসার পর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তোমার একটা প্রার্থনার কক্ষ পেয়েছো। অন্তত এক সাথে জড়ো হওয়ার একটা জায়গা পেয়েছো। তোমাদের নতুন ক্যাম্পাসে বড় আকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলে মন্দির বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটা ধর্মেই শান্তির কথা বলা আছে। তাই সবার উচিত ধর্ম সঠিক ভাবে পালন করা। ধর্ম মানুষকে মাদক ও নানা সামাজিক অপকর্ম থেকে বিরত রাখে। মূলত এই অনুশাসনের জায়গায় সব ধর্ম একই।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষের বৈষম্য কখনো ধর্ম দিয়ে হয় না। মানুষের বৈষম্য হয় তার কাজের মধ্যে দিয়ে, তার সততার মধ্য দিয়ে। যায় হোক তোমাদের এতো সুন্দর আয়োজন দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি।’
ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয় চন্দ্র রাজবংশী বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বেশ কিছু সময় হয়ে গেলো। কিন্তু এই প্রথম আমার সস্ত্রীক এখানে আসা। এই একই ছায়ার নিচে সকলকে দেখে একটা ভালোলাগা কাজ করছে। আমাদের তো আসলে এই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে পাশে মন্দির নেই। সেক্ষেত্রে একটা অপূর্ণতা থেকে যায়। তারপরে এতো দিনে একটা প্রার্থনার কক্ষের ব্যাবস্থা হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে একটা ভালো লাগা কাজ করছে। আর ছাত্র-ছাত্রী সবাইকে নিয়ে শিবরাত্রির মতো একটা দিন পালন করতে পারছি এটাতেও একটা ভালো লাগা কাজ করছে।’
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, কুবি’র সভাপতি অজয় চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘শিবরাত্রি হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দুধর্মীয় পূজা। এই মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। মহাশিবরাত্রি হল সনাতন ধর্মালম্বীদের আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহারাত্রি’। ক্যাম্পাসে দ্বিতীয়বার এই আয়োজন করা হয়েছে। সকল সনাতনী শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আনন্দের সাথে পূজায় অংশগ্রহণ করেছে। কুবি প্রশাসন সহযোগিতায় সুষ্ঠু ভাবে শিবরাত্রি পূজা সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। আশা করি, প্রশাসনের সহযোগিতার ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’