মুবাশশির আলম রাহুল, জামালপুর প্রতিনিধি :
জামালপুরে আইনজীবীদের সঙ্গে ছাত্রজনতার সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে আজ (সোমবার )দুপুরে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সম্প্রতি ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জে দুইটি ধর্ষণের বিচারের দাবিতে শহরের বকুল তলা চত্বরে মানববন্ধন করে ছাত্র জনতা মানববন্ধন শেষে ওই ধর্ষণ মামলা দুটির আসামির পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে যায় তারা। এসময় অভিযুক্ত এক আসামির বয়স কম দেখানোর বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে ছাত্রদের বাকবিতন্ডা হয়। পরে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ৷
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি এডভোকেট ফজলুল হক জানান, ইসলামপুর থানার নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় জিআর আমলি আদালতে আসামি সবুজের পক্ষের আইনজীবী আব্দুল ওয়াহেদ ও নজরুল ইসলাম তরফদার জামিন আবেদন করেন আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে।
ধর্ষণ মামলার আসামি সবুজের পক্ষে জামিন আবেদন করায় আদালতের বাইরে অবস্থানরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা এর প্রতিবাদ জানায়। এ সময় আদালত চত্বরে শিক্ষার্থীদের হামলায় প্রবীণ আইনজীবী খলিলুর রহমান, আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল আওয়াল ও শাহজাহান আলী আহত হন। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে রেদোয়ান খন্দকার মাহিন জানায়,আজকের আন্দোলনের মূল লক্ষ ছিলো ধর্ষকের সঠিক বিচার চাওয়া।আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বকুল তলা চত্বরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে বিক্ষোব মিছিল করে দয়াময়ীতে উপস্থিত হই। কিন্তু আমরা যখন শুনতে পায় একজন এডভোকেট ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ধর্ষকের জামিন, না রিমান্ড মঞ্জুর ও ৩৬ বয়সী ধর্ষকের ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে।
পরবর্তী আমাদের সাথে তারা মিটিং আয়োজন করে এবং আমাদের সাথে বসতে চায়। আমরা যখন বসতে যাচ্ছিলাম তখন আমাদের উপর হামলা করে এবং আমাদের ৭-৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেল সম্পাদক আমিনুল এহসান বলেন, ‘আইনজীবীরা ভুল তথ্য দিয়ে ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন করিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়।
জামালপুর আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, ‘একটি মামলাকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে আসে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখানে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে। আইনজীবীদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ন্ত্রণে আনে।’
আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রিশাদ রেজওয়ান বাবু সাংবাদিকদের জানান, আদালতে ন্যায়বিচার চাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক। তিনি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জামালপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াহিয়া আল মামুন বলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে ছাত্রদের ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি ।