দৈনিক আমার বাংলাদেশ প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজারের পেকুয়ায় বারবাকিয়া বাজারের ইজারা নিয়ে বিরোধের জেরে এক পল্লী চিকিৎসককে মারধর এবং তার ফার্মেসি থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী চিকিৎসক মো. ইলিয়াস অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
প্রকাশ্যে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ
মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ ভবনের নিচতলায় শত শত মানুষের সামনে মো. ইলিয়াসকে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. ইলিয়াস জানান, “ছাত্রদল নেতা ফরহাদ, এরশাদ, মানিক, জিয়াউর রহমানসহ অন্তত ২০ জন আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করে। পরে তারা বারবাকিয়া বাজারে আমার ফার্মেসিতে গিয়ে লুটপাট চালায় এবং নগদ সাড়ে সাত লাখ টাকা নিয়ে যায়।’’
তিনি আরও বলেন, “তারা আমাকে জোর করে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়েছে। বারবাকিয়া বাজারের ইজারার দরপত্রে সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া
স্থানীয়রা জানান, পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ফরহাদ হোসাইন সম্প্রতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দখলদারিত্বের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানান, “ফরহাদ আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছিল। আমি চাঁদা দিতে না চাইলে তিনি হুমকি দেন যে ব্যবসা করতে দেবেন না।”
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ফরহাদের কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভেতরেও ক্ষোভ রয়েছে। গত ২৮ আগস্ট বিএনপির এক সংবর্ধনা সমাবেশে দলের নেতা-কর্মীরা ‘দালাল, দালাল’ স্লোগান দিয়ে ফরহাদকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন।
অভিযুক্তের পাল্টা বক্তব্য
অভিযুক্ত ফরহাদ হোসাইন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মারধর বা টাকা লুটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি কোনো ইজারা নেইনি বা কারও জন্য তদবীর করিনি। এটি আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার।”
তিনি আরও বলেন, “চোরাই রড আমি পুলিশকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম। সে কারণে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।”
পুলিশের ভূমিকা ও তদন্ত
পেকুয়া থানার এক কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী ইলিয়াস এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপসংহার
বারবাকিয়া বাজারের ইজারা নিয়ে সৃষ্ট এই বিরোধ শুধু ব্যক্তিগত লড়াই নয়, এটি স্থানীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের লড়াই হিসেবেও দেখা হচ্ছে। অভিযোগ সত্য হলে এটি স্থানীয় প্রশাসনের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।