মোঃ মাহিন খান, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার বাবা ও চাচাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে স্থানীয় একদল বখাটে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (১০ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের জোড়খালী এলাকায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বুধবার রাতে কাঁঠালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, ফলে ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, অভিযুক্তরা হলেন—জোড়খালী এলাকার মাহাবুব মল্লিকের ছেলে রাজ মল্লিক (১৯), সালাম মল্লিকের ছেলে সিফাত মল্লিক (২২) এবং মোস্তফা মল্লিকের ছেলে আরিফ মল্লিক (২১)। তারা এলাকার চিহ্নিত বখাটে ও উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা এজাহারে উল্লেখ করেন, তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং দীর্ঘদিন ধরে রাজ মল্লিক তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। মেয়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে রাজ মল্লিক ক্ষিপ্ত হয়ে অপহরণের হুমকি দিতে থাকে।
১০ মার্চ দুপুরে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্তরা তার পথরোধ করে। তারা ছাত্রীটির কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে এবং ওড়না ছিঁড়ে ফেলে। আতঙ্কিত হয়ে ছাত্রীটি দৌড়ে বাড়িতে চলে আসে এবং পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
পরবর্তীতে ছাত্রীর বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের সতর্ক করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে। মেয়েটি বাবাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও পেটানো হয়। এসময় চিৎকার শুনে ছাত্রীটির চাচা মো. আলম ব্যাপারী এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করেন।
অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ভুক্তভোগী পরিবারকে অ্যাসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাজ মল্লিকের মা আমেনা বেগম বলেন, “আমার স্বামী বিদেশে থাকায় ছেলেটা কিছুটা বখে গেছে। আমি ওকে সামাল দিতে পারি না। আইনগতভাবে যা কিছু হবে, তা মেনে নেব।”
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মং চেনলা জানান, “এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে ভুক্তভোগী পরিবারকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।”
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।