মোহাম্মদ নয়ন তজুমদ্দিন ভোলা প্রতিনিধিঃ
ভোলা জেলার সদর উপজেলার অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ভোলা খালটি তেঁতুলিয়া এবং মেঘনা নদীর একমাত্র সংযোগকারী খাল। জোয়ার ভাটার মোহনীয় খেলার এ খালটিতে নিকট অতীতে ঢাকা থেকে ভোলা যাতায়াতের লঞ্চগুলো চলাচল করতো এবং ভোলার মানুষ খুব সহজেই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌপথে চলাচল করতো। জেলার আনাচে-কানাচে উৎপাদিত শস্য ভোলার বাজারে এ খাল ব্যবহার করেই নৌকাযোগে কৃষকরা নিয়ে আসতো। অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভোলা জেলার শহরের মানুষের নিত্যকাজে ব্যবহৃত এ খালটি কালের বিবর্তনে আজ মৃতপ্রায়। দখল আর দূষণে পানি হয়েছে দূষিত, খালের নাব্যতা স্বল্পতায় জোয়ার ভাটা প্রায় বন্ধ। অগ্নিকান্ডের মত কোন দূর্ঘটনা ঘটলে পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা এখন প্রায় অসম্ভব।
শিবপুর ইউনিয়নের জয়দেব মাঝি জানান, জীবনভর এই খালে নৌকা দিয়ে মালামাল বয়ে নিয়ে গেছি ভোলা পৌর কাঁচা বাজারে। মাঝের চরের জেলে শ্রী অনিল জানান, মাছ ধরতাম মেঘনায় নৌকাতে নিয়ে যেতাম ভোলা শহরে কিন্তু এখন আর যেতে পারিনা খালে পানি না থাকায়।
ভোলা পৌর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো: শেখাবুর রহমান জানান, আমরা সারাদিন মাছ বিক্রি করে ভোলা খালে গোসল করে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরতাম। কিন্তু গত প্রায় এক দশক যাবৎ খালের পানিতে নামাই যায় না, গোসল তো দূরের কথা।
কিছু অবৈধ দোকান আর দালান নির্মাণের কারণে ভোলা খাল অনেক জায়গাতেই দখল হয়ে গেছে বহু আগেই। ভোলাবাসীর প্রাণের দাবী ভোলা খালটি অনতিবিলম্বে অবৈধ দখল মুক্ত হবে এবং পুন:খননের মাধ্যমে আবার ফিরে পাবে খালটি তার জীবন যৌবন। শুরু হবে জোয়ার ভাটার খেলা, আবার নব উদ্যমে কিশোর দামাল ছেলেরা দল বেধে খালে গোসলের আনন্দে মেতে উঠবে। রক্ষা পাবে জীব বৈচিত্র, ফুল ফল ফসলে ভরে উঠবে ভোলা খালপাড় সংলগ্ন অবারিত মাঠ। অচিরেই কর্তৃপক্ষ ভোলা খাল বাঁচানোর কাজে হাত দিবে এটিই ভোলাবাসীর প্রত্যাশা।
এ বিষয়ে উপপরিচালক স্থানীয় সরকার এবং প্রশাসক ভোলা পৌরসভাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ভোলা খাল আবার সচল হোক এবং জোয়ার ভাটার খেলা শুরু হোক এ প্রত্যাশা ভোলাবাসীর সাথে আমিও করি। পানি উন্নয়ন বোর্ড, অচিরেই কোন বড় প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার খাল খনন, সৌন্দর্য বর্ধন করবে এবং একই সাথে শিবপুরে যে স্লুইচ গেট আছে সেটিও ভেঙ্গে আরো বৃহৎ আকারে পুন:নির্মাণ করবে সেটিই কাম্য।