গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন অনলাইন পোর্টাল সংস্কার সংক্রান্ত সাত দফা সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদের নেতৃত্বে কমিশনের প্রতিনিধিরা এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
প্রতিবেদনে অনলাইন নীতিমালার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে বেশ কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুপারিশ হলো— অনলাইন পোর্টাল ও আইপিটিভির জন্য বিদ্যমান নীতিমালায় সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচারে থাকা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কমিশনের প্রস্তাবগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কমিশনের সাত দফা সুপারিশগুলো হলো-
১. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের নীতিমালা হালনাগাদ করা এবং এর আলোকে নিবন্ধন প্রদানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা যেহেতু বিগত সরকারের প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর ন্যস্ত ছিল, সেহেতু তা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর অর্পণ করা সমীচীন।
২. গত দশকে যেসব অনলাইনে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তা যেহেতু কোনো স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতির অধীনে হয়নি, বরং সরকারের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে, সেহেতু সেগুলো পর্যালোচনা প্রয়োজন। এ পর্যালোচনার দায়িত্ব স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন।
৩. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার যে তদন্ত ব্যবস্থা রয়েছে, তার অবসান প্রয়োজন।
এক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ডিক্লারেশনের জন্য বিদ্যমান পুলিশের তদন্তব্যবস্থাই যথেষ্ট গণ্য করা যায়।
৪. অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধন পাওয়ার পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা হোক।
৫. অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না-এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা উচিত।
৬. অনলাইন পোর্টালে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আলোকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. অনলাইন পোর্টালের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের ফির কয়েক গুণ। এটি সংবাদমাধ্যমকে নিরুৎসাহিত করার নীতি। এর অবসান হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে গত ১৮ নভেম্বর সরকার ১১ সদস্যের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনের প্রধান করা হয় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদকে।