মোঃ বাদশা প্রামানিক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
”একাডেমিক সুপারভাইজার বোরহান উদ্দিন বলেন, ইউএনও স্যারের হস্তক্ষেপে এবং শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সমস্যার সমাধান হয়েছে। পরবর্তীতে ওই স্কুলের অফিস সহকারিসহ যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নীলফামারীর ডিমলয় গোয়াবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি-২০২৫ সালের পরীক্ষার আগের দিন এসেও প্রবেশপত্র হাতে না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শিক্ষার্থীরা। নানা নাটকীয়তার পর দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা। দিনভর এমন পরিস্থিতির পর অবশেষে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আশ্বাসে শান্ত হয় পরিস্থিতি।
এক পর্যায়ে পরীক্ষার আগের রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়ার অনুরোধে প্রবেশপত্র না পাওয়া গয়াবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ১১ শিক্ষার্থীকে রাতেই প্রবেশপত্র দেয় শিক্ষা বোর্ড।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার গয়াবাড়ি ইউনিয়নের ”গয়াবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজে” বুধবার সকালে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে যান শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র হাতে পেলেও ১১ জন পরীক্ষার্থী এদিন প্রবেশপত্র হাতে পাননি। এ কথা ছড়িয়ে পরে সবার মাঝে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা ওই স্কুল এন্ড কলেজের অফিস সহকারি (স্কুল শাখা) মো. ফেরদৌস হোসেনসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ খবর পেয়ে বিকালেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরহাদ হোসেন ফিলিপকে ডেকে নিয়ে আসেন তার কার্যালয়ে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কন্ট্রোলারকে বিশেষ ব্যবস্থায় এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। তার অনুরোধে রাতেই শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাতে প্রবেশপত্র হস্তান্তর করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাবা ইনছান আলী বলেন, এডমিট নিয়া ভেজাল হইছিল তাই আমরা আন্দোলন করছি। ইউএনও স্যারের অনুরোধে বাদ দিছি। রাতের মধ্যেই সন্তানের এডমিট পাইছি। খুব খুশি লাগতাছে।আমার সন্তান পরীক্ষা দিতে পারব। তবে যারা এর জন্য দায়ী তাদের শাস্তি দাবী করছি।
আরেক শিক্ষার্থীর বাবা নবাব আলী বলেন, ইউএনও স্যার ও বোর্ডের অফিসার স্যারদের আল্লাহ ভালো করুক। এডমিট না পাইলে একটা বছর শেষ হইয়া যাইতো। এমনেই লেখাপড়ার যে অবস্থা! আমরা গরীব মানুষ।
প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে এমন প্রতিক্রিয়া অন্যান্য পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
এদিকে প্রবেশপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বোরহান উদ্দিন।
এ বিষয়ে গয়াবাড়ি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরহাদ হোসেন ফিলিপ বলেন, ফরম ফিলাপের নির্দিষ্ট তারিখ এবং জরিমানা সহ তারিখ দেওয়া হয়। এই তারিখের মধ্যে অনেকেই ফরম ফিলাপ করে আবার অনেকে করেনা। যারা ফরম ফিলাপ করে তাদের হিসাব সংরক্ষিত থাকে। আমার জানামতে এই ১১ জন পরীক্ষার্থী ফরম ফিলাপ করেনি।তাদের ফরম ফিলাপ করার অফিসিয়াল কোন রেকর্ড নাই।গতকালকে জানতে পারলাম তারা অফিস সহকারীর কাছে ফরম ফিলাপের ফিসের টাকা জমা দিয়েছে। যা অফিস সহকারী আমাকে অবগত করেনি।
তিনি বলেন, ইউএনও স্যারের হস্তক্ষেপে এবং বোর্ড কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থায় সমস্যার সমাধান হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। পরবর্তীতে ওই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীসহ যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।