মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পনের টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পনের টাকা বেড়ে বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে বাজারে। এই দামে ক্রেতারা অসুন্তুষ্ট হলেও খুশি পেঁয়াজ চাষীরা।
চাষিরা বলছেন, পেঁয়াজ চাষে হয়েছে প্রচুর খরচ, দেশের পেঁয়াজেই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব, তাই প্রয়োজন নেই আমদানির। আর কৃষি বিভাগ বলছে কৃষকের কথা চিন্তা করে পেঁয়াজের খরচ বিবেচনায় একটি দাম নির্ধারনের জন্য সরকারকে সুপারিশ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সারাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের তৃতীয় জেলা রাজবাড়ীতে লক্ষ্যমাত্রা ছারিয়েছে পেঁয়াজ আবাদ। রাজবাড়ীতে এ বছর ৩৭ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। এ থেকে ৫ লক্ষ্য ২৫ হাজার মেট্টিকটন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
রাজবাড়ীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানাগেছে, এক সপ্তাহ আগেও এ জেলায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। যে কারণে অনেক কৃষক মাঠ থেকেই পেঁয়াজ উত্তোলন করেনি, আবার যারা উত্তোলন করেছে তারা বাজারে তোলেনি পেঁয়াজ। কিন্তুু হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি জেলার কৃষকেরা। এখন প্রতিটি হাটেই বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে পেঁয়াজ।
রাজবাড়ী জেলার চন্দনী ইউনিয়নের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, বর্তমানে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে এতে লাভবান হবে কৃষক। এ জেলার কৃষক ধান বিক্রি করে পেঁয়াজ রোপন করে আবার পেঁয়াজ বিক্রি করে পাট বপন করে। সার ঔষুধ ও শ্রমিকের মুজুরী বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে খরচও পরে বেশি। তাই বর্তমান সরকার যেন পেঁয়াজ আমদানি না করে।
তিনি আরো বলেন, রাজবাড়ীর প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে এখন শত শত মন পেঁয়াজ সংরক্ষণ আছে। যে পরিমানের পেঁয়াজ আমাদের দেশে মজুদ আছে তা দিয়েই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মতিউর রহমান মুন্না বলেন, দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পেঁয়াজের আমদানিও বেড়েছে। তাছাড়া সিন্ডিকেটের দৌরাত্ন কমায় খুশি পেঁয়াজ চাষী ও ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে আকার ভেদে ১ হাজার ৮ শত থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজবাড়ীর উপ-পরিচালক ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ীর মাটি পেঁয়াজ চাষের উপযোগি তাই পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ছে। এছাড়াও নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যাবহারের কারণে এ জেলা থেকে দেশের শতকরা ১৪ ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর রাজবাড়ীতে ৩৭ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। এ থেকে ৫ লক্ষ্য ২৫ হাজার মেট্টিকটন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধে পাবনা-ফরিদপুর-রাজবাড়ীসহ দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলার কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্ত্রনালয়ের সাথে সভা হয়েছে। সেখানে পেঁয়াজের একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করার জন্য সরকারে সুপারিশ করা হয়েছে।