ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন,” অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০ মাস পার হলো। এত মাস পার হলেও ফ্যাসিবাদের বিচার না হওয়াটা একটা প্রোপাগান্ডার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। বিষয়টি নিয়ে এখনই আলাপ শুরু করা প্রয়োজন।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাস্টিস ফর জুলাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কর্তৃক আয়োজিত ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ জানান, “প্রত্যেক মানুষের অন্তরে ন্যায়ের বীজ নিহিত। যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না, তখন চিন্তাজগতে সুনামি সৃষ্টি হয়। এ কারণেই ২০২৪ সালের আন্দোলন হয়েছে।”
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী থেকে শুরু করে ১৯৭১-পরবর্তী সময়েও দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়েছে বারবার। স্বাধীনতার পর থেকেও এই দেশে ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়েছে বারবার।”
বিচারহীনতার সংস্কৃতি ভেঙে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “শুধু ২০২৪ সালের আন্দোলনের বিচার নয়, অতীতের বছরের পর বছর চলমান মামলাগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক-শ্রমিক, দিনমজুরের জমির মামলারও বিচার চাইতে হবে। তবেই প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বিচার কাঠামো নতুনভাবে ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে এবং চাপিয়ে দেওয়া হেজেমনি ভাঙতে হবে।”
ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লাকে উল্লেখ করে ফুয়াদ বলেন, “দাঁড়িপাল্লা ন্যায়ের প্রতীক, ভারসাম্যের প্রতীক। রাষ্ট্র যখন গুনাহ বা পাপ করে, তখন রক্ত দিয়ে লড়াই করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হয়। ন্যায় যদি নিজের বিরুদ্ধেও যায়, তবুও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করো।”
সভাপতির বক্তব্যে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রইচ উদ্দিন বলেন, “গ্রাম থেকে শহর প্রতিটি স্তরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি কায়েম হয়েছিল একসময় এই দেশে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসাইন বলেন, “একসময় আমাদের অর্থনীতি ছিল বিশ্বের সেরা। পৃথিবীর মোট জিডিপির ১২.৫% ছিল আমাদের। সঠিক বিচার ও সামাজিক নিরাপত্তা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে পারে না। ব্রিটিশরা আমাদের অর্থনীতি ভেঙে যে উপনিবেশিক কাঠামো রেখে গেছে, তা থেকে আমরা আজও মুক্ত হতে পারিনি।”
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাস্টিস ফর জুলাইয়,জবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক মোঃ সজিবুর রহমান। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী -শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।