বুধবার (০৫ জুন) কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাড়িতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে বিরোধীদলের নেতা নির্বাচনের বিষয়ে সরাসরি কোনো আলোচনা হয়নি।
তবে ঘরোয়া আলোচনায় দলের নেতারা অনেকে রাহুল গান্ধীকে বিরোধীদলীয় নেতা বানানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
বৈঠকের আগে উদ্ধব ঠাকুরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, আগামীবার ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করতে পারলে সেই সরকার ব্যবস্থায় রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হতে রাজি থাকলে এ নিয়ে তাদের আপত্তি থাকবে না।
২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে লোকসভায় কোনো বিরোধীদলের নেতা ছিলেন না। ওই সময়ে কংগ্রেস বৃহত্তম বিরোধীদল হলেও বিরোধীদলনেতা হওয়ার মতো আসন পায়নি তারা। কেননা বিরোধীদলের নেতা হিসেবে পার্লামেন্টে জায়গা পেতে হলে লোকসভার মোট আসনের ১০ শতাংশ জিততে হবে। ফলে প্রথম মেয়াদে মল্লিকার্জুন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে অধীর চৌধুরী বিরোধীদলনেতা ছিলেন।
এবারের নির্বাচনে অধীর হেরে গেছেন। কেবল তিনি নয়, মধ্যপ্রদেশে দিগ্বিজয় সিংহ, ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, রাজস্থানের সি পি জোশি এবং হিমাচলে আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতারাও হেরে গেছেন। ফলে রাহুল গান্ধী রাজি না হলে কংগ্রেসের জোট ইন্ডিয়ার নেতা কে হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
দলীয় নেতারা বলেন, বিরোধীদলের প্রধানকে সিবিআই প্রধান, লোকপাল এবং মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার নিয়োগের বাছাই কমিটির বৈঠকে যেতে হয়। এসব জায়গায় প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রীও থাকেন। ফলে রাহুল গান্ধী বিরোধীদলের নেতা হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হয়ে নিজের মত বা আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরতে পারবেন।
কংগ্রেসের আরেক অংশের মতে, রাহুল গান্ধী সারা দিন সংসদে থাকার লোক নন। ফলে তার জন্য বিরোধীদলের প্রধানের ভূমিকা পালন করা কঠিন। তিনি সংসদে বসে থাকার বদলে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার বিষয়ে আগ্রহী। এবারের নির্বাচনে গতবারের চেয়ে ৪৭টি আসন বেশি পেয়েছে কংগ্রেস। তবে বেশকিছু জায়গায় সাংগঠনিক দুর্বলতা স্পষ্ট। ফলে মাঠে সংগঠন মজবুত করার কাজে নিয়োজিত হওয়া তার জন্য বেশি বাস্তবিক।
উল্লেখ্য, ভারতের ৫৪৩ আসনের এবারের লোকসভার নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৩ আসন। অপরদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৩ আসন।