লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের ওপর হামলার হুমকির পাশাপাশি ইইউ সদস্য দেশ সাইপ্রাসকেও সতর্ক করেছে। সেই দেশের ওপর হামলা হলে ইইউ ও ব্রিটেনও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হিজবুল্লাহ প্রধান সৈয়দ হাসান নাসারাল্লাহ ইসরায়েলের পাশাপাশি এই প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ সাইপ্রাসের ওপরও হামলার হুমকি দিয়েছেন।
তার বক্তব্য অনুযায়ী, ভূমধ্যসাগরের অন্যান্য অংশেও তার গোষ্ঠী হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলের পুরো ভূখণ্ডসহ আশেপাশের যেকোনো এলাকার ওপর জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে সুনির্দিষ্ট হামলার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের মাঝে হিজবুল্লাহর সঙ্গেও ইসরায়েল পুরোদস্তুর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তার আঁচ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লেবাননের সঙ্গে সুসম্পর্ক সত্ত্বেও সাইপ্রাস ইসরায়েলকে নিজস্ব বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটি ইসরায়েলকে সামরিক মহড়ার জন্য ব্যবহার করতে দেওয়ায় হিজবুল্লাহ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেখান থেকে লেবাননের ওপর হামলা চালানো হলে সাইপ্রাসের সরকারও যুদ্ধের অংশ হয়ে উঠবে বলে নাসরাল্লাহ হুঁশিয়ারি দেন।
সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোদুলিদেস অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তার দেশ কোনো সংকটেই কোনো পক্ষকে সমর্থন করছে না। তিনি বরং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে নিজের দেশের ইতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরেন।
তার মতে, আরব দেশগুলি ও আন্তর্জাতিক সমাজ সেই ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। সাইপ্রাস প্রকাশ্যে সরাসরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে কোনো সহায়তা দেয়নি। তবে সাইপ্রাসের বিশাল আকাশসীমার মধ্যে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী মাঝেমধ্যে মহড়া চালানোর অনুমতি পেয়েছে। সেই দেশে ব্রিটেনের সামরিক ঘাঁটি থেকে অতীতে সিরিয়া ও সম্প্রতি ইয়েমেনে হামলা চালানো হয়েছে। সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে ব্রিটেনের দুটি সামরিক ঘাঁটি সেই দেশে সক্রিয় রয়েছে।
ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী ও সিরিয়ার বাশার আল আসাদের সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে আরো বড় সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জাতিসংঘ ও মার্কিন প্রশাসন উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে বুধবার মার্কিন বিমানবাহিনী ইয়েমেনে হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকার ওপর হামলা চালিয়েছে। সেখান থেকে লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর হামলা চালানো হচ্ছিল বলে অ্যামেরিকা দাবি করেছে।
গতকাল বুধবার ইসরায়েলি বিমানবাহিনী লেবাননের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর কয়েকটি স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এক দিন আগে সেই গোষ্ঠী ইসরায়েলের উত্তরে নিজস্ব ড্রোন থেকে তোলা ভিডিও প্রকাশ করে হাইফা শহর ও বন্দরে সামরিক স্থাপনার ওপর হামলার হুমকি দিয়েছিল। সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।