ছাত্ররা নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানা থেকে লুট হওয়া ৭টি অস্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিক্ষুদ্ধ জনতা এই অস্ত্রগুলো কেড়ে নিয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীরা সেগুলো জমা দিয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে শটগান, থ্রি নট থ্রি রাইফেল, পিস্তল ও দোনালা বন্দুক।
স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়। এরপর তারা সেখানে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আনন্দমিছিল থেকে কয়েকজন সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ওই সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। এরপর উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা-ভাঙচুর চালালে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরে উত্তেজিত জনতা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আরও শতাধিক লোক আহত হয়। এতে ৪ পুলিশসহ আটজন মানুষ মারা যায়। ওই সময় বিক্ষুদ্ধ জনতা সোনাইমুড়ী থানা থেকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা ৭টি উদ্ধার করে জমা দিয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেল ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে সোনাইমুড়ী থানা প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মো. ইফতেখারের কাছে অস্ত্রগুলো জমা দেওয়া হয়। এর আগে, একই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে ছাত্ররা।
এর আগে বুধবার নোয়াখালী জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোনাইমুড়ীতে যান। তারা সেখানের স্থানীয় ছাত্র-জনতা এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ সদস্যসহ নিহত শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। সংঘাত, সহিংসতা ও লুটপাটের ষড়যন্ত্রকে ধৈর্য ও সচেতনতার সঙ্গে ছাত্র-জনতাকে মোকাবিলার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মো. ইফতেখার জানান, ছাত্ররা অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে জমা দিয়েছে। অস্ত্রগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অস্ত্র ফেরত দেওয়া ছাত্রদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে, গত দুদিন ধরে নোয়াখালীর বিভিন্ন সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখতে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া প্রধান তারা সড়কের বিভাজকের সৌন্দর্য বাড়াতে গাছ লাগানোর কাজ করছেন। শিক্ষার্থীদের এমন কাজে বেজায় খুশি স্থানীয় এলাকাবাসী। অপরদিকে, নোয়াখালীতে রাজনৈতিক মামলায় কারাবরণ করে একদিনে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতের ৪৯ জন নেতাকর্মী।